দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ ২০২১ শের বিধানসভা নির্বাচনকে একটু ব্যতিক্রমী বলা যেতেই পারে । দেশ জুড়ে করোনার আবহের মধ্যেই এই লড়াই ছিল মূলত কেন্দ্রশক্তি বনাম রাজ্য শক্তি মোদী-মমতার মধ্যে । শেষ পর্যন্ত দেখা গেল শেষ হাসিটা মমতার ঠোঁটেই । এদিকে নির্বাচনের ফল নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছেই । তবে নির্বাচন কমিশনের ওয়েব সাইটের তথ্য থেকে উঠে এল একটি চমকপ্রদ তথ্য । দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে বেশী ব্যবধানে জয়ী প্রার্থী তৃণমূল থেকে জিতেছেন । আবার সবচেয়ে কম ভোটের ব্যবধানে জেতা প্রার্থী বিজেপির হয়ে জিতেছেন ।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই ছিল মূলত বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে । একদিকে তৃণমূল বড় জয় পেয়েছে, বিজেপি হয়েছে বিরোধী দল । অন্যদিকে বাম ও কংগ্রেস খাতা খুলতেই পারেনি, একেবারে ভরাডুবি । রাজ্য বিধানসভা ইতিহাসে এই প্রথমবারের মত বাম এবং কংগ্রেসের কোন প্রতিনিধি বিধানসভা কক্ষে প্রবেশ করতে পারছেন না । গত লোকসভার ফলাফল বিচার করলে দেখা যাবে বিজেপি তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে আছে । অন্যদিকে গতবারের বিধানসভার সাথে তুলনা করলে বিজেপি আসন সংখ্যা অনেক বাড়িয়ে নিয়েছে । ৩ থেকে একেবারে পৌঁছে গেছে ৭৭ এ ।
এবার দেখা যাক এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশী এবং সবচেয়ে কম ব্যবধান নিয়ে কোন দলের কোন প্রার্থী জিতলেন । কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, সর্বোচ্চ ব্যবধান নিয়ে জিতেছেন তৃনমূলের সুজাপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী মহম্মদ আবদুল গনি । তিনি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের ইশা খান চৌধুরীকে ১ লাখ ৩০ হাজার ১৬৩ ভোটে পরাস্ত করেছেন। ইশা খান ছিলেন একই কেন্দ্রের প্রার্থী ।
অন্যদিকে সর্বনিম্ন ব্যবধান নিয়ে জিতেছেন গেরুয়া শিবিরের নিশীথ প্রামানিক । দিনহাটা কেন্দ্র থেকে জয়ী নিশীথ তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের উদয়ন গুহকে মাত্র ৫৭ ভোটে পরাস্ত করেছেন । উদয়ন গুহ গতবারের বিজয়ী বিধায়ক ছিলেন দিনহাটা কেন্দ্রেই । ২০১৬ সালে প্রায় ১৬ হাজার ভোটের ব্যবধান নিয়ে তিনি জয়ী হয়েছিলেন ।
এদিকে ভোট পরবর্তী বাংলায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক হিংসা । স্বভাবতই অভিযোগের তীর তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে তুলছে বিজেপি থেকে শুরু করে বাম-কংগ্রেস জোটও । তবে তৃনমূলের উপরেও কমবেশী হামলার খবর পাওয়া গেছে । বাংলার রাজনীতি ইতিহাসে ভোট পরবর্তী হিংসা নতুন কিছু নয় । এর আগে, তৃণমূল বিরোধী দল থাকাকালীন এই নিয়ে একাধিক বার অভিযোগ জানিয়েছে । এবার জানাচ্ছে বিজেপি । তবে গতকাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যপাধ্যায় শপথ নেবার পরেই কোন প্রকার হিংসা বরদাস্ত করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন । অন্যদিকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও ‘বোন’ মমতাকে একই অনুরোধ জানিয়েছেন । আগামীদিনে এদের মিলিত প্রচেষ্টা রাজ্যে শান্তির আবহ তৈরি করুক এখন এটাই কাম্য ।