দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার বিধানসভায় গিয়ে মুকুল রায় শপথ নেবার পরে বিজেপির প্রথম বৈঠকেই অনুপস্থিত । সেখানে তাৎপর্যপূর্ণভাবে শুভেন্দু অধিকারীকেও দেখা গেল না । এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ নেবার আগেই বলেছেন, যারা দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তারা ফিরে আসতে চাইলে সমস্যা নেই । তার কথায়, ‘আসুক না। কে বারণ করেছে? এলে স্বাগত!’ কিন্তু দলের নেত্রীর এমন ক্ষমাসুলভ মনোভাবে তৃণমূল কর্মীদের অনেকেই খুশি হতে পারছেন না। এবার তাই দলের সুপ্রিমোকে দেওয়া হল খোলা চিঠি । ইতি মধ্যে সেই চিঠি ভাইরাল ।
তৃনমূলের নিচের দিকে এক কর্মী নিজেকে ক্ষুদ্র কর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে ‘দিদি’কে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন,
‘তুমি আমায় চেনো না গো দিদি, আমি তোমার বৃহত্ দলের এক ক্ষুদ্র কর্মী,শাখা সংগঠনের..আমাদের মত কর্মীরা তোমার দলরূপ কাঠামোর ছোট্ট ছোট্ট অংশমাত্র!জানি, আজ যা লিখছি সেটা তোমার কাছে পৌঁছাবে না.. তবু না বলে পারলাম না গো। তোমার মনে আছে,২০১৭ সাল.. কেউ একটা নিজের পিঠ বাঁচাতে চলে গেল বিজেপিতে, হাতে একটা লাল ডায়েরি দেখিয়ে বললো ‘এতে সব আছে ‘!!আমাদের মত কর্মীদের কাছে সে তখন ‘চানক্য’..।’পশ্চিমবঙ্গের ৭৭ হাজার বুথে আমার লোক আছে’ বলা লোকটা তোমার সাথে বেইমানি করলো.. তুমি দমে যাও নি!! ২০১৯ এর লোকসভার আগে দীনেশ ত্রিবেদীকে টিকিট দিলে বলে অর্জুন সিং দল ছাড়লো, বনগাঁতে ঠাকুরবাড়ির কোন্দল লাগলো..এই জেলায় ফল ৩-২.. গোটা রাজ্যে আমরা ২২ আর ওরা ১৮। ২০২০, মহামারী চরমে, তুমি নিজের জীবনের পরোয়া না করে ছুটে বেড়াচ্ছো.. তোমার কর্মীরা তোমায় দেখে তোমার সাথে ছুটছে.. মেদিনীপুরের বেইমানটা setting a ব্যস্ত!দর কষাকষি করছে.. নিজেকে ‘জননেতা’ বলছে, ফেসবুক জুড়ে তার ‘অনুগামী’দের বড়ো বড়ো বুগনি!!যাবো কি যাবো না করে ডিসেম্বরে তিনি রওনা দিলেন.. মঞ্চে উঠে সদর্পে বললেন,’আমি তো ২০১৪ সাল ঠেকে যোগাযোগ রাখছি!’ ওরা আবার তোমার সাথে বেইমানি করলো.. ডোমজুরের মোচাটা, live এ এসে রাজনীতির পাঠশালা খোলার জ্ঞান দিয়ে ঝাঁপ দিলো মোদির কোলে.. তার আগে তোমার ছবি হাতে নিয়ে এক প্রস্ত নাটক, বাড়ী ফেরার সময় হয়তো সেই ছবিটার স্থান হয়েছিল কোনো আস্তাকুড়ে!!
এরা গেছে, প্রকাশ্যে গেছে!!এমন অনেক বেইমান গাদ্দার আছে যাঁরা আজও দলে থেকে প্রতিনিয়ত দলের সাথে বেইমানি করেছে, বিশ্বাস ভেঙেছে তোমার!! তুমি আজ ক্ষমাশীলা! হ্যাঁ দল তোমার তুমি ক্ষমা করতেই পারো!!কিন্তু আমরা দিদি? আমরা তো তোমার বিপদের দিনে শুধু তোমায় আঁকড়ে ছিলাম.. সমস্ত রকম ঝুঁকি নিয়েও তোমায় ছাড়ি নি!তুমি যা বলেছো মাথা পেতে নিয়েছি.. আজ কি তুমি আমাদের কথা একবারও ভাববে না? এই বিশ্বাসঘাতকদের নিচ্ছো, নাও!!কিন্তু এদের আমাদের নেতা বানিও না.. আরো একবার লবি তৈরির সুযোগ দিও না..আমাদের শুধু এত টুকুই প্রার্থনা তোমার কাছে.. বাকি তুমি নেত্রী, তোমার সিদ্ধান্ত শিরোধার্য!!
ইতি, তোমার দলের এক ক্ষুদ্র কর্মী’।
উল্লেখ্য, দলের ক্ষুদ্র পরিচয় দেওয়া এই কর্মী চিঠিতে কাদের কথা লিখেছেন, সেটি সবার কাছে স্পষ্ট । এদিকে মুকুল রায় শপথ নেওয়ার পর বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। দলের মধ্যেই তাকে নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা । একবার দল বদল করে ফের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন অনেক তৃণমূল যুব সমর্থক মেনে নিতে পারছেন না। ওই ভাইরাল পোস্টের বিভিন্ন কমেন্ট থেকে সে বিষয় পরিষ্কার ।