দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ দীর্ঘ অবসানের পর বাজারে করোনা ভ্যাকসিন বেরিয়েছে । করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক অনেকাংশে দূর হলেও, নতুন করে ভ্যাকসিন নিয়ে আতঙ্ক শুরু হয়েছে । দেখা গেছে, ভ্যাকসিন নেবার পর অনেকেরই শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে । ফলে ভ্যাকসিন কতখানি নিরাপদ সেটি নিয়েই উঠছে প্রশ্ন । এর মধ্যে রাশিয়ার তৈরি দ্বিতীয় পর্যায়ের ভ্যাকসিন ১০০ শতাংশ কার্যকর বলে দাবী করেছে মস্কো ।
মঙ্গলবার রাশিয়া করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে চমকপ্রদ দাবী জানাল । যেখানে বিশ্বের বহু দেশ থেকে করোনা ভ্যাকসিন নেবার পর নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, এমনকি মৃত্যুর খবর পর্যন্ত পাওয়া গেছে, সেখানে রাশিয়া জানাল, ‘স্পুটনিক V’-র পরে তাঁরা নতুন করে যে করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করেছে, সেটি নিরাপদ এবং ১০০ শতাংশ কার্যকর হবে মানব শরীরে । নতুন এই প্রতিশেধকটির নাম ‘এপিভ্যাককরোনা’ ।
রাশিয়া প্রথম করোনা ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক-v’ আবিস্কার করার পর গোটা দুনিয়ায় শোরগোল ফেলে দিয়েছিল । কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় সেই ‘স্পুটনিক -v’ এ বেশ কিছু ত্রুটি আছে । এবার সাইবেরিয়ার ‘ভেক্টর স্টেট রিসার্চ সেন্টার অব ভাইরোলজি অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি’র তৈরি করোনা ভ্যাকসিন এপিভ্যাককরোনা তৈরি করেছে । এই ভ্যাকসিনটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পরেই প্রতিষেধকটির কার্যকারিতা সম্পর্কে এই মন্তব্য করেছে তাঁরা ।
মঙ্গলবার মস্কো থেকে জানিয়েছে তাদের বিজ্ঞানীরা এপিভ্যাককরোনা ভ্যাকসিনের সফলভাবে ক্লিনিক্যালি ট্রায়াল দিয়েছে । দেখা গেছে এই নতুন ভ্যাকসিন একশ শতাংশ কার্যকর । রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী তাতিয়ানা গোলিকোভা জানিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি থেকেই সাধারণের জন্য টিকা উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৪ জুলাই এপিভ্যাককরোনা ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য ভেক্টর রিসার্চ সেন্টারকে ছাড়পত্র দিয়েছিল রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ২৭ জুলাই প্রথম স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে সেটি প্রয়োগ করা হয় । প্রথম পর্যায়ে ট্রায়ালের জন্য ১৪ জনের শরীরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয় । দ্বিতীয় পর্যায়ে ৪৩ জন স্বেচ্ছাসেবক ট্রায়েলের জন্য অংশ নেন ।
গত বছর গোটা বিশ্ব করোনা ভ্যাকসিন আবিস্কারের জন্য দিন রাত পরিশ্রম করছিল, ঠিক সেই সময় রাশিয়া সবাইকে চমকে দিয়ে ঘোষণা করে তাদের গামালিয়া ইনস্টিটিউটের তৈরি ‘স্পুটনিক ভি’ বিশ্বের প্রথম করোনা ভ্যাকসিন । কিন্তু রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক V সেবার বিতর্কেও জড়িয়ে পড়ে । কারন, নিয়ম অনুযায়ী ভ্যাকসিন বাজারে ছাড়ার আগে তিনবার পরীক্ষা করা হয় । কিন্তু, স্পুটনিক তিনবারের পরীক্ষা শেষ হবার আগেই রাশিয়া ছাড়পত্র দিয়ে দেয় ।
বর্তমানে, রাশিয়া দ্বিতীয় পর্যায়ের ভ্যাকসিন এপিভ্যাককরোনার কথা ঘোষণা করেছে, এটি রীতিমতো পরীক্ষাপর্ব ও তার ফলাফলের খুঁটিনাটি সামনে আনার পরেই সাফল্য দাবি করেছে তারা। আমেরিকার মডার্না, ফাইজ়ার, বা ব্রিটেনের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার তৈরিযে ভ্যাকসিনগুলি এখন বিশ্বের বাজার দখল করেছে । এবার রাশিয়ার তৈরি এই এপিভ্যাককরোনা ভ্যাকসিন কতখানি গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে সেটাই দেখার ।