দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ একজন মহিলাকে চারবার বিয়ে করলেন এবং তিনবার ডিভোর্সও দিয়ে দিলেন । তাও কিনা মাত্র ৩৭ দিনের মধ্যে । অথচ আইনের দিক থেকে তিনি নিরপরাধ থেকে গেলেন । একদিকে ছুটিও মঞ্জুর হল অন্যদিকে অফিস বেতন দিতে বাধ্য হল । কিন্তু কিভাবে এই কাজটি করলেন ? দেখে নেওয়া যাক আসল ঘটনা কি ছিল ।
তাইওয়ানের এক ভদ্রলোক তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেই শহরের এক ব্যাঙ্কের ক্লার্ক হিসাবে চাকরী করেন । আচমকা তার বিয়ে ঠিক হয় । ২০০৬ সালের ৬ এপ্রিল তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন । সেদেশের নিয়ম অনুযায়ী তার ব্যাঙ্ক তাকে মোট ৮ দিনের জন্য ছুটি মঞ্জুর করে বেতনসমেত । কিন্তু উক্ত ভদ্রলোক দেখলেন, তার বিবাহ, অনুষ্ঠান, মধুচন্দ্রিমা সব কিছু করার জন্য এক মাসের ছুটি দরকার । এরপরেই তিনি করলেন এক অদ্ভুত পরিকল্পনা ।
ব্যাঙ্কের দেওয়া ছুটি শেষ হতে না হতেই তিনি নিজের স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে দিলেন এবং পরদিন আবার বিবাহ করলেন । আইন অনুযায়ী সেই ব্যাক্তির ছুটির খাতায় আরও ৮ দিন যোগ হল । এভাবে চারবার বিবাহ ও তিনবার ডিভোর্স দিয়ে নিজের একমাসের কোটা পূর্ণ করে নিলেন । কিন্তু এর পরেই হল সমস্যা ।
ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ উক্ত ব্যাক্তির চালাকি ধরে ফেলে । তাই মোট ৩২ দিনের ছুটি কাটালেও মালিক পক্ষ ৮ দিনের বেশি বেতন দিতে অস্বীকার করে । কিন্তু এর পরেই সেই কেরানি ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয় তাইপেই সিটির লেবার ব্যুরোতে । সেখানে তার দাবী, তার ব্যাঙ্ক শ্রম আইন লঙ্ঘন করে তাকে বেতন থেকে বঞ্চিত করেছে । তিনি জানান, তাইপোর আইন অনুযায়ী কোনও কর্মচারী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর আট দিনের সবেতন ছুটির পেতে পরে। তাই চারবার বিবাহের জন্য আইন মেনে তাঁর ৩২ দিনের ছুটি পাওয়া উচিত।
আশ্চর্যের বিষয়,তাইপেই সিটি লেবার ব্যুরো এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করে এবং ওই ব্যাক্তির পক্ষে রায় দেয় । রায়ে মালিক পক্ষ নিয়ম ভাঙ্গার অভিযোগে অভিযুক্ত হয় এবং সঠিক বেতন না দেবার জন্য বেতন ভারতীয় টাকায় ৫২,৮০০ টাকা জরিমানা দিতে বাধ্য হয় । যদিও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে ।
ব্যাঙ্কের দাবী তাদের ওই কর্মচারীর শ্রম আইনে বিবাহের ছুটির যে ধারা রয়েছে, সেই ধারার অপব্যবহার করছে। অবৈধভাবে অতিরিক্ত ছুটি নেওয়ার চেষ্টা করেছে। তাই, এই রায় তারা মানছে না। কিন্তু সম্প্রতি সেই মামলার রায় আবার প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই কেরানীর আচরণ অনৈতিক ছিল। তবে, তারপরও তিনি কোনও আইন লঙ্ঘন করেননি। তাই ব্যাঙ্ককে জরিমানা দিতেই হবে ।