দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশজুড়ে লাগামছাড়া সংক্রমণ অব্যাহত । এরই মধ্যে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন রাজধানীতে দীর্ঘদিন ধরে চলা কৃষক আন্দোলন থেকে শুরু করে নির্বাচনী প্রচার এবং কুম্ভমেলা একেবারে খাদের কিনারায় এনে ফেলেছে । এই অবস্থায় রাজনৈতিক প্রচার, মিটিং, মিছিল, রোড শো এবং বিভিন্ন জনসভা বন্ধ করার আবেদন জানাল রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেইলট ।
শনিবার নরেন্দ্র মোদী টুইট করে দেশবাসীর কাছে এবারের কুম্ভমেলাকে প্রতীকী মেলা হিসাবে পালন করার অনুরোধ করেন । তার অনুরোধে সাড়া দিয়ে জুনা আখড়া নিজেদের মেলা থেকে দূরে রাখার কথা ঘোষণা করে । এছাড়া অন্যান্য অনেক আখড়া মেলাস্থান ত্যাগ করার চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে । এররেই রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেইলট টুইট করে যে কোন ধরনের রাজনতিক প্রচার, জনসভা, রোড শো বন্ধ করার আবেদন জানান ।এরপর তিনি টুইটারে লেখেন, ‘ ইলেকশন কমিশন এবং রাজ্যগুলি বর্তমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। যেভাবে হু-হু করে করোনা বাড়ছে তাতে ভোট সংক্ষিপ্ত হওয়ায় ভালো। তবে এই বিষয়ে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট যা বলবে তাই-ই হবে।’
যেভাবে লাগামছাড়া সংক্রমণ শুরু হয়েছে, তাতে অল্প কিছুদিনের মধ্যে সব কিছু নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। রাজ্যে এইমুহূর্তে চলছে বিধানসভা নির্বাচন । সবে মাত্র পাঁচ দফা ভোট শেষ হয়েছে । কিন্তু এরই মধ্যে খুব দ্রুত বিভিন্ন জেলায় করোনা সংক্রমণের বাড়াবাড়ি শুরু হয়েছে । সবচেয়ে ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনায় । এদিকে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, বাকি তিন দফা ভোট একসাথে নেওয়া সম্ভব নয় । এই অবস্থায় নির্বাচনী প্রচার, জনসভা, মিটিং, মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা না করলে পরিস্থিতির ভয়াবহতা আরও অনেকগুন বেড়ে যাবে ।
জানা গেছে, কুম্ভমেলা থেকে ফেরত আসলে কমপক্ষে ১৪ দিনের কোয়ারেনটাইন থাকার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লী সরকার । এই নির্দেশ না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে । এছাড়া দিল্লির মতই মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা সরকারও একই নির্দেশিকা জারি করেছে কুম্ভ ফেরতাদের জন্য । কিন্তু রাজনৈতিক কারনে রাজ্যের নেতাদের টনক নড়ছে না ।
রাজ্যে নির্বাচনের মধ্যে একাধিক রাজনৈতিক নেতার করোনা আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া গেছে । সপ্তাহখানেই আগেই বিশেষজ্ঞরা জানিয়ে দিয়েছিল, আগামী দুই সপ্তাহ সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে । কিন্তু নির্বাচনী প্রচারের হাওয়ায় সেই সাবধানবানী কোথায় উড়ে গেছে ! এদিকে করোনা সংক্রমণ এতটাই বেড়েছে, উত্তর প্রদেশ সরকার রবিবার লকডাউন ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে । সংবাদ মাধ্যমে সে রাজ্যের করোনা মৃতদেহের সারি সারি জ্বলন্ত চিতা দেখে শিউরে উঠেছে গোটা দেশ । উত্তরপ্রদেশ সরকার লকডাউন ছাড়াও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে । জানা গেছে, প্রথমবার মাস্ক ছাড়া ধরা পড়লে জরিমানা দিতে হবে ১০০০ টাকা । এর পরেই যদি ফের দেখা যায় মাস্কহীন অবস্থায় তাহলে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে ফাইন ।