দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ করোনার দ্বিতীয় ঢেউের সংক্রমণে বেসামাল অবস্থা । রাজ্যেও ভোট পরবর্তীকালে করোনা পরিস্থিতি খুব খারাপ । এই অবস্থায় আংশিক লকডাউন থেকে বেরিয়ে পূর্ণ লকডাউন ছাড়া দ্বিতীয় উপায় থাকল না। এবার পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্যের ক্লাব সংগঠন এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাল রাজ্য সরকার।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য ক্লাব, সামাজিক সংগঠন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে আইসোলেশন হোমের সংখ্যা বাড়াতে আহ্বান জানানো হল । এই মুহূর্তে রাজ্যে দৈনিক প্রায় ২০ হাজারের বেশী নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হচ্ছে । মৃত্যুর সংখ্যাও একশ’র গণ্ডি পেরিয়ে গেছে । এই অবস্থায় স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেখানে এ বার থেকে কোনও ক্লাব অথবা কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা করোনা-আক্রান্তদের জন্য ফাঁকা ফ্ল্যাট, ক্লাবঘর বা কমিউনিটি হলের ব্যবস্থা করতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে ।
এই মুহূর্তে রাজ্যের প্রায় সব কয়টি সরকারী কিম্বা বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিং হোম করোনা রোগীতে ভর্তি । ফলে নতুন করে আইসোলেশন হোমের সংখ্যা বাড়াতে না পারলে পরিস্থিতি আরও সঙ্গিন হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে । স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, ক্লাব অথবা কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যদি এগিয়ে এসে আইসোলেশন হোম গঠন করে, তাহলে সেই বিষয়ে রাজ্য সরকার থেকে সব ধরনের সাহায্য পাওয়া যাবে । সেখানে, সরকারী উদ্যোগে চিকিৎসক থেকে শুরু করে পেশাদার নার্স থাকবেন । এছাড়া, থাকবে অক্সিজেনের ব্যবস্থা, ওষুধ এবং প্রয়োজনীয় সব কিছুই । সব কিছুই ব্যবস্থা করা হবে, রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে।
স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে, শুধু মাত্র শহর নয়, রাজ্যের যে কোন প্রান্তের, যে কোন জেলায় এই উদ্যোগ বেওয়া হলে সম্পূর্ণভাবে সাহায্য করা হবে । যদি কোন ক্লাব, সামাজিক সংগঠন তথা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এগিয়ে আসতে চায়, তাহলে, সংশ্লিষ্ট জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। তবে এই ধরনের আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করতে বেশ কিছু শর্তও আরোপ করেছে স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে আইসোলেশন হোমের জন্য –
১) প্রস্তাবিত আইসোলেশন সেন্টারে যাতায়াতের জন্য পৃথক দরজার বন্দোবস্ত থাকতে হবে।
২) সঙ্গে রাখতে হবে স্যানিটাইজেশনের বন্দোবস্তও।
৩) এক রোগীর শয্যা থেকে অন্য রোগীর শয্যার মধ্যে অন্তত ১ মিটারের দূরত্ব রাখতে হবে।
৪) আইসোলেশন সেন্টারগুলিতে জ্বর, পালস, শ্বাসপ্রশ্বাস মাপার বন্দোবস্ত থাকা জরুরি। সঙ্গে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কত রয়েছে, তা জানার ব্যবস্থাও রাখতে হবে। রাখতে হবে অক্সিজেন সিলিন্ডার।
৫) আইসোলেশনে থাকা কোনও ব্যক্তির যদি অবস্থার অবনতি হয়, তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে শুরু করে। তা হলে তাঁকে চিকিত্সকদের পরামর্শে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থাও রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে, রোগীদের জন্য পরিবহণের ব্যবস্থা সঙ্গে ২৪ ঘণ্টার জন্য ওই সেন্টারে স্বেচ্ছাসেবক রাখাও জরুরি।
গত বছর বেশ কিছু সংগঠন নিজেদের উদ্যোগে আইসোলেশন হোমের ব্যবস্থা করেছিল । এই বছরেও অনেকেই এগিয়ে এসেছেন । কিনতি এত দিন বহু ক্লাব, সামাজিক সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিষেবা দিতে এগিয়ে এলেও, তাতে সরকারি সিলমোহর ছিল না। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ বার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এই নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করায়, সেই সব সংগঠনের সরাসরি সরকারের সঙ্গে যুক্ত হয়েই কোভিড রোগীদের পরিষেবা দিতে আর কোনও বাধা রইল না।