আইএসএফের সাথে হাত মেলানোই ছিল সবথেকে বড় ভুল ! মানছেন বাম নেতারা
আইএসএফের সাথে হাত মেলানোই ছিল সবথেকে বড় ভুল ! মানছেন বাম নেতারা

দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ রাজ্যের ইতিহাসে এই প্রথমবার কোন বাম নেতা বিধানসভা কক্ষে প্রবেশ করতে পারছেন না । ২০২১ শের বিধানসভা নির্বাচনে এইভাবে ‘সাফ’ হতে হল কেন, তাই নিয়ে এখন বাম নেতৃত্বের মধ্যে শুরু হয়েছে কাঁটা ছেঁড়া ! অন্যদিকে এবারের নির্বাচনে নতুন বাম প্রার্থীরা তুলনামূলকভাবে লোকসভার তুলনায় বেশী ভোট পেয়েছেন । ফলে বেশিরভাগ বাম নেতা কার্যত স্বীকার করে নিচ্ছেন, আইএসএফের সাথে হাত মেলানোই ছিল সবথেকে বড় ভুল !

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সংযুক্ত মোর্চা কোনভাবেই দাগ কাটতে পারেনি । কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরের উপর আস্থা হারিয়েছেন । এদিকে ‘কিং মেকার’ আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফ কার্যত ভুইফোঁড় দল হয়েও একটি আসন নিয়ে বিধানসভা প্রবেশের টিকিট নিতে পেরেছে । কিন্তু বামফ্রন্ট কিম্বা কংগ্রেসের মত সর্বভারতীয় দল একেবারে মুখথুবড়ে পড়েছে । দলের এই বিপর্যয় মানতে পারছেন না কেহই । বামফ্রন্টের রাজ্যকমিটির প্রথম বৈঠকেই এই নিয়ে মুখ খুলছেন একাধিক নেতা ।

নির্বাচনের পর, আজ সিপিএম এর প্রথম রাজ্যকমিটির বৈঠক বসে ভার্চুয়ালি । সেখানে, অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, এভাবে রাজ্যকমিটিতে পর্যালোচনা না করে আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট গঠন নিয়ে । দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ঘাম-রক্ত ঝরিয়ে যে ধর্মনিরপেক্ষ ইমেজ তৈরি করতে পেরেছিল বামদল, এবার এই একটি সিদ্ধান্তে মানুষের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে ! যদিও, এ দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে জানানো হয়েছে, এখনই জোট ভাঙ্গা হচ্ছে না । তবে জোট সঙ্গীদের যে কেউ ইচ্ছা করলে, বেরিয়ে যেতে পারেন ।

আজকের রাজ্যসভার এই ভার্চুয়ালি বৈঠকে সরাসরি এবারের বিপর্যয়ের জন্য দলীয় নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে । আইএসএফ প্রসঙ্গে বলা হয়, তাদের সাথে জোট বাঁধার আগে রাজ্যকমিটিতে কোন আলোচনা করা হয়নি । অন্যদিকে বাংলায় দল হিসাবে না হলেও, মুখ্যমন্ত্রী মমতার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশী । আর.এস.এস পর্যন্ত মমতার এই জনপ্রিয়তা স্বীকার করে নিয়েছে। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনার পদ্ধতি অনেক ক্ষেত্রেই ঠিক ছিল না । গত এক দশক ধরে তৃণমূল নেত্রী যেভাবে একের পর এক নতুন প্রকল্প নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছেছেন, তাতে সমালোচনা, কিম্বা এই  প্রকল্পগুলি নিয়ে নানা সময়ে নানা টিকাটিপ্পনী ভালো ভাবে নেয়নি সাধারণ মানুষ ।

এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আইএসএফ-এর একমাত্র জয়ী সদস্য, ভাঙরের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি । আইএসএফ নিয়ে এত কথা হলেও, তিনি কোন মন্তব্য করতে চাননি । তিনি জানিয়েছেন, বামদল থেকে এখনও পর্যন্ত কোন আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি । যদি এমন কিছু হয়, সেইভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে ! এদিকে আজ বাম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের প্রসঙ্গ ওঠে । আপাতত  আগামী তিনমাস তাকে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে ।