প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনাঃ প্রকাশ্যে এল হাজার কোটির কেলেঙ্কারি !
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনাঃ প্রকাশ্যে এল হাজার কোটির কেলেঙ্কারি !

দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ ভোটের মুখে ‘প্রধান মন্ত্রী আবাস যোজনা’ নিয়ে বড়সড় কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে এল । কেন্দ্রীয় তদন্ত কারী সংস্থা (CBI) এই বিশাল অংকের কেলেঙ্কারির তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে এলেন । সিবিআই-এর পক্ষ থেকে জানা গেছে, অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে প্রধান মন্ত্রীর আবাস যোজনার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে ।

রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন সামনেই । প্রতিটি রাজনৈতিক দল পারস্পারিক দোষগুন তুলে ধরছে সাধারন মানুষের সামনে । এরই মাঝে প্রকাশ্যে এল প্রধান মন্ত্রী আবাস যোজনার তহবিল থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে । তদন্ত করে সিবিআই এর আধিকারিকরা জানিয়েছেন,  ডিএইচএফএল কর্তারা খুব বুদ্ধিমত্তার সাথে এই আর্থিক কেলেঙ্কারি করেছেন । আর্থিক কেলেঙ্কারির পর্দাফাসের পাশাপাশি বুধবার দেওয়ান হাউজিং ফিনান্স লিমিডেট (DHFL)-এর প্রমোটার কপিল ও ধীরাজ ওয়াধাওয়ানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সিবিআই। উল্লেখ্য এই দু’জন সম্পর্কে দুই ভাই ।

সিবিআই সুত্রে জানা গেছে, এই দুই ভাই পরিকল্পনা করে ‘ভুয়ো ও কল্পিত’ গৃহঋণের অ্যাকাউন্ট খুলেছিল । পরিকল্পিতভাবে এই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের আবাস যোজনার  ১১,৭৫৫ কোটি টাকা ঋণ হিসাবে হাতিয়ে নেয় । এমনকি সেই টাকার ভর্তুকি বাবদ প্রাপ্য ১৮৮০ কোটি টাকাও যুক্ত হয় ।  ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ডিএইচএফএল বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে জানা গেছে, প্রধান মন্ত্রী আবাস যোজনায় সেই সময় তারা মোট  ৮,৮৬৫ টি ঋণের আবেদন করে । সরকারী ভর্তুকি হিসাবে ৫৩৯.৪ কোটি টাকা সেই সময় হাতিয়ে নেয় ।

গরীবের মাথার উপর ছাদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পটি চালু করে । এই প্রকল্পে সমাজে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর নেওয়া  ঋণের উপর সরকারি ভরতুকি দেওয়া হয়। ডিএইচএফএলের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই ভর্তুকির টাকা দাবী করার ব্যবস্থা করে ।

সিবিআই-এর আধিকারিকরা জানিয়েছেন, তারা  ফরেনসিক অডিট থেকে জানতে পেরেছেন, কপিল ও ধীরাজ ২.৬ লক্ষ জাল আবাসন ঋণ অ্যাকাউন্ট খোলেন । এই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে অধিকাংশ ছিল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে । এই অ্যাকাউন্টগুলির সুদ বাবদ প্রাপ্য ভর্তুকির টাকা আরও একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্টে দাবী করা হয় । পরীক্ষা করে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এই ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলিতে মোট ১৪,০৪৬ কোটি টাকার ‘ঋণ’ দেওয়া হয়েছিল । আর এই টাকার মধ্যে  ১১,৭৫৫.৭৯ কোটি টাকা অন্য একটি ভুয়ো সংস্থায় ট্রান্সফার করা হয়েছিল ।

কপিল ও ধীরাজ – এই দুই ভাই আরও একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার সাথে যুক্ত । ২০২০ সালে ইয়েস ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারির সাথে এদের নাম জড়িয়ে যায় । ২০২০ সালের জুন মাসে ইয়েস ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা রানা কপূরের পরিবারের সঙ্গে ডিএইচএফএলের বিনিয়োগ সংক্রান্ত সমস্যা তৈরি হয় । এরপর সিবিআই তদন্তে নামে । সেই সময়  সিবিআই কপিল, ধীরাজ এবং রানার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয় ।