দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ গোটা ভারতকে অনায়াসে জয় করে বাংলায় মমতার কাছে এসে থেমে যেতে হল মোদী, অমিত শাহকে ! বাংলার রাজনীতি মমতাময় হয়ে উঠল পুরো গেরুয়াবাহিনীকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মত তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর । যেভাবে রীতিমত শক্তিশালী গেরুয়া বাহিনীকে একাই রুখে দিলেন মমতা, তাতে আগামী দিনে বিজেপি বিরোধী দলগুলির নেতৃত্বে মমতাকেই ভরসা করতে পারে এমনটাই ধারনা করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ।
রবিবার সকাল থেকেই ভোট গণনা শুরু । আর প্রথম থেকেই এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস । দিনের শেষে দেখা গেল শেষ হাসিটা মমতার মুখেই লেগে থাকল । সে সময় সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, ‘এবারের নির্বাচন কি বেশি চ্যালেঞ্জের ছিল?’ মমতা সোজা উত্তর দিলেন, ‘গোটা দেশের নিরিখে এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা মানুষের আশীর্বাদে সেই নির্বাচন জিতেছি। গোটা দেশের মানুষের জন্য এই নির্বাচন আমার কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।’ এই উত্তরেই আগামী দিনে কি লক্ষ্য নিয়ে তৃণমূল এগোতে চাইছে স্পষ্ট হল ।
এদিকে, বাংলায় মমতা পুরো বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসার আগেই, সমাজবাদী পার্টি থেকে শিবসেনা, আপ থেকে ন্যাশনাল কনফারেন্স, সমস্ত বিরোধী দলের নেতারাই ‘বাংলার মেয়ে’র লড়াকু এবং একরোখা মানসিকতার প্রশংসা করেন । দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে থাকে একের পর এক টুইট এবং বিবৃতি । দেখে মনে হচ্ছে, আগামীদিনে কেন্দ্রে মোদীকে সরাতে মমতাই হতে পারেন একমাত্র মুখ!
গতকাল পশ্চিমবাংলা ছাড়াও অসম, তামিলনাড়ু, কেরালা ও পুদুচেরিতে ভোট গণনা ছিল । এর মধ্যে, অসম, ও পদুচেরিতে বিজেপি জয়লাভ করেছে । বাকী দুই রাজ্যে ‘প্রত্যাশিত’ ফলই করেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু বাংলার কাছে এসে গেরুয়া ঝড় থেমে গেল । বিজেপির ‘ইস বার, দোশো পার’ শপথ পূরণ করতে পারল না তারা । এখন ঠিক কি ফর্মুলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদী-অমিত শাহকে হারিয়ে দিলেন, সেটাই কাজে লাগাতে চাইবেন বিজেপি বিরোধী শিবির ।
নন্দীগ্রামে নিজেকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করার পরেই পায়ে চোট পান মমতা । কিন্তু ঠিক দুই দিন পরেই হুইল চেয়ারে করেই একের পর এক জনসভা করে গেছেন । পায়ে প্লাস্টার আর হুইল চেয়ার নিয়েই শেষ করলেন বাংলার ভোট। ‘নিজের’ পায়ে উঠে দাঁড়ালেন রবিবার, বাংলা জয়ের পর। রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন ২০২১ ছিল মূলত ‘মোদী-মমতা’ লড়াই । আর সেই লড়াইয়ে মমতা জিতে যেতেই বিরোধীরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে ।
এদিকে গতকাল ফল ঘোষণার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ঘোষণা করেছেন । তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, ‘বিনামূল্য ভ্যাসসিন না দিলে অহিংস আন্দোলন করব।’ সেইসঙ্গে, শরদ পওয়ার, সীতারাম ইয়েচুরি, উদ্ধব ঠাকরে, সনিয়া গাঁধী-সহ মোট তেরো জন বিরোধী নেতার সঙ্গে মমতার একটি যৌথ বিবৃতিও প্রকাশ হয়। বিনামূল্যে ভ্যাকসিনের দাবি প্রথম তুলেছিলেন মমতাও। সবদিক থেকে বিচার করলে একটাই মানে দাঁড়াচ্ছে, আগামী দিনে করোনা নিয়ে কেন্দ্রকে চেপে ধরতে সনিয়া গান্ধী নন, বরং মমতাই সামনের সারিতে চলে আসছেন । আর মমতার সাফল্যকে ২০২৪ পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইতেই পারেন বিরোধীরা । আর সেবার হয়ত গোটা ভারততে একটাই নির্বাচন হবে, ‘মোদি বনাম মমতা’ !