Narada Scam: মাঝরাতের নাটক ! ফিরহাদসহ চার বিধায়কের ঠাই প্রেসিডেন্সি জেল !
Narada Scam: মাঝরাতের নাটক ! ফিরহাদসহ চার বিধায়কের ঠাই প্রেসিডেন্সি জেল !

দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ লকডাউনের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকেই বঙ্গ রাজনীতি উত্তাল । নারদা মামলায় পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমসহ চার বিধায়ককে সিবিআই গ্রেপ্তার করার পর দিনভর চলল টানটান উত্তেজনা । মাঝরাত পর্যন্ত চলল সেই নাটক । ঘড়ির কাঁটা যখন রাত ১ টা, তখন নিজাম প্যালেস থেকে এই চার বিধায়ককে নিয়ে যাওয়া হল প্রেসিডেন্সি জেলে। বুধবার শুনানি পর্যন্ত তাদের ঠিকানা সেখানেই ।

সকাল তখন নয়টা । পরিবহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের চেতলা বাড়ি থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্যে তাকে তুলে আনা হল নিজাম প্যালেসে । চার্জশিট পেশ করে জানিয়ে দেওয়া হল গ্রেপ্তার করা হয়েছে । একই দিনে একে একে আরও তিন বিধায়ক সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও নারদ মামলায় গ্রেপ্তার করা হল । একটু পরেই সেখানে উপস্থিত হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । দিনভর চলল নাটক । সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ অন্তর্বর্তী জামিনে ছাড়া হল তাদের। কিন্তু সেই রায়ে কলকাতা হাইকোর্ট স্থগতিদেশ দেওয়ায় রাত ১ টা নাগাদ পুলিশি নিরাপত্তায় নিয়ে যাওয়া হল প্রেসিডেন্সি জেলে।

গভীর রাতে নিজাম প্যালেসের ১৫ তলা থেকে যখন এই চার হেভিওয়েট নেতা নেমে আসেন তখন তাদের সাথে ছিল পরিবারের লোকজন । রাতে নিজাম প্যালেসে পৌঁছন সুব্রতবাবুর স্ত্রী ছন্দবাণী মুখোপাধ্যায়। সুব্রতবাবুকে বেশ কয়েকটি ওষুধ খেতে হয়। সূত্রের খবর, তা পৌঁছে দিয়েছেন ছন্দবাণী। পেশায় যিনি একটি পত্রিকার সাংবাদিক। নিজাম প্যালেসে ছিলেন ববি হাকিমের মেয়ে, মদন পুত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে ও মেয়ে। শোভন ও ফিরহাদ হাকিমকে একটি গাড়িতে তোলার পর, অন্য গাড়িতে সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও মদন মিত্রকে তোলা হয় । এরপর নিয়ে যাওয়া হয় জেলে ।

সকাল থেকেই এই চার নেতা নিজাম প্যালেসে ছিলেন । গভীর রাতে যখন তাদের নীচে নিয়ে আসা হয়, রীতিমত ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায় পরিবহন মন্ত্রীকে । সাংবাদিকদের সামনে তিনি জানান,  ‘জামিন পাওয়া আমার অধিকার। সিবিআইয়ের সঙ্গে আমি বরাবর সহযোগিতা করেছি। কিন্তু বিজেপি বাংলায় হেরে স্রেফ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে এটা করল’। সেই সাথে সাংবাদিকরা প্রভাবশালীর কথা তুললে তিনি জানান, ‘হ্যাঁ আমি জনপ্রিয়। আমার জন্য কয়েক হাজার ছেলে এসেছে। তা কি আমার অপরাধ? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে কলকাতায় কোভিড মোকাবিলার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি কলকাতাকে বাঁচাতে পারলাম না’।

এদিকে এবারের বর্ষীয়ান প়ঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে খবুই ক্লান্ত দেখাচ্ছিল । এদিকে তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র জানান,  ‘শুভেন্দু-মুকুলের কিছু হল না, আমরাই যত অন্যায় করলাম!’ ভোটের পর পরই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মদন মিত্র। তাঁর শরীর এমনিতে ভাল নয়। তাঁকে দেখেও বেশ কিছুটা বিধ্বস্তই মনে হচ্ছিল। অন্যদিকে ছেলে ও মেয়েকে পাশে নিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সময়েই বলেছিলাম, আমি কোনও আর্থিক অনিয়ম করিনি। আজও সে কথাই বলছি।” 

এদিকে প্রেসিডেন্সি জেলে এই চার নেতাকে নিয়ে যাবার পর সেখানে রাত ১ টা ২০ নাগাদ হাজির ছিলেন ফিরহাদ হাকিমের স্ত্রী ও মেয়ে, শোভনের ছেলে, এবং শোভন বান্ধবী বৈশাখী । তিনি ফটকের বাইরে দাঁড়িয়ে বারবার অনুরোধ করতে থাকেন,  ‘আমাকে ঢুকতে দিন। ওনাকে অনেকগুলো ওষুধ খেতে হয়। নইলে মরে যাবে। কেউ জানে না ওনার প্রবল সিওপিডি আছে’। তবে তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি।