দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ রাজ্যে ক্রমশ কোভিড পরিস্থিতি ভয়ংকর । প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষ একযোগে করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে । অথচ কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, মানুষের অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে একের পর এক হাসপাতাল যা খুশি বিল করে দিচ্ছে । অথচ ভিতরে কি হচ্ছে দেখতে না পেয়ে মুখ বুঝে সহ্য করা ছাড়া উপায়ও থাকছে না। এবার অতিরিক্ত চড়া বিল নেওয়ার অভিযোগে কলকাতার তিনটি নামী হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ করার নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য দপ্তর। পাশাপাশি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, ঐ হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা নিয়ে ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বারবার উঠে আসছে করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে বেশ কিছু অসাধু মানুষ রীতিমত ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন । অক্সিজেন থেকে শুরু করে জরুরী পথ্য, কিম্বা আম্বুলেন্স থেকে শ্মশান ঘাট, সব জায়গায় কিছু না কিছু অভিযোগ থাকছে । এবার রাজ্য হেল্থ রেগুলেটরি কমিশনের পক্ষ থেকে এই অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তা ভাবনা শুরু হয়েছে । জানা গেছে, সম্প্রতি কলকাতার তিনটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে রোগীদের কাছ থেকে চড়া বিল নেওয়ায় অভিযোগ উঠেছে । তদন্তে নেমে রাজ্য হেল্থ রেগুলেটরি কমিশন জানতে পারে বেহালা, পার্কসার্কাস ও নিউটাউনে অবস্থিত তিনটি হাসপাতালের মালিক একই ব্যাক্তি ।
জানা গেছে, বেহালা, পার্কসার্কাস ও নিউটাউনের ওই তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৩০৮টি বেড রয়েছে । এই বেডগুলির মধ্যে মোট ১৮০ টি কোভিড আক্রান্তদের জন্য সংরক্ষিত । এই তিনটি বেসরকারি হাসপাতালের ডিরেক্টর চিকিত্সক প্রবীর মুখোপাধ্যায়। রাজ্য হেল্থ রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে বলেছেন, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রথম দিকেই কমিশন হাসপাতালগুলিকে সতর্ক করেছিল । বলা হয়েছিল বিলের চাপে যাতে কোনও রোগীর পরিবার হয়রানির শিকার না হয়। কিন্তু বাস্তবে সেই অতিরিক্ত বিলের বোঝা চাপানো হচ্ছে রোগীর পরিজনদের উপর । এই কারনেই আপাতত এই তিন হাসপাতালে নতুন করে রোগী ভর্তি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
গত বছরও করোনার সময়ে একই অভিযোগ উঠেছিল বারবার । সেই সময় স্বাস্থ্য কমিশন একাধিক হাসপাতালে রোগী ভর্তির উপরে সাময়িকভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল । এবার এই তিন হাসপাতালের ডিরেক্টর জানিয়েছেন, কমিশনের নোটিশ পেয়েছেন । আপাতত সোমবার থেকে নতুন কোন রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না । এদিকে তদন্তের জন্য স্বাস্থ্য কমিশন বেশ কিছু নথি মঙ্গলবারের মধ্যেই জমা দেবার নির্দেশ দিয়েছে । এছাড়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় ওঠা অভিযোগগুলির পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পুরানো বিল চাওয়া হয়েছে । সেখা হবে সেখানেও কোন গরমিল আছে কিনা ? তারপরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে । আপাতত এই তিনটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে । আগামী দিনে এই ধরনের কোন অভিযোগ যে হাল্কা ভাবে নেওয়া হবে না পরোক্ষভাবে জানিয়ে দিল কমিশন !