দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ ফের খবরের শিরোনামে চলে এলেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর । বিধানসভা নির্বাচন শুরু হবার পরেই পিকে জানিয়েছিলেন, এবারের নির্বাচনে বিজেপি যদি তিন সংখ্যার আসন পায়, তাহলে তিনি কাজ ছেড়ে দেবেন ! এদিকে প্রশান্ত কিশোর দায়িত্ব নেবার পরে তৃণমূল দলের মধ্যেই উঠেছিল কিছু প্রশ্ন । সেই উত্তর দিলেন পিকে ।
বিহারে বাড়ি হলেও ২০১১ সালে প্রশান্ত কিশোর জনস্বাস্থ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে গুজরাটে অপুষ্টি দূর করার প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু ক্রেছিলেন । এরপর ২০১৪ সাল পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদীর রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করেন। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকান নি তিনি । নিজের সংস্থা আইপ্যাককে সাথে নিয়ে একের পর এক বৈতরণী পার করেছেন । বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বিহারের নীতীশ কুমার, দিল্লির অরবিন্দ কেজরীবাল, পঞ্জাবের অমরেন্দ্র সিংহ, অন্ধ্রপ্রদেশের জগন্মোহন রেড্ডির মত অনেক মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ।
রাজ্যে প্রশান্ত কিশোরের আগমনের পিছনে মূল কারন ছিল ২০১৯ শের লোকসভা নির্বাচন । রাজ্যে শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেগের উপর নির্ভর করে ৩৪ বছরের বাম জমানার ইতি ঘটিয়েছিল যে তৃণমূল দল, সেখানে প্রশান্তের মত ভোটকুশলীর কি আদৌ দরকার ছিল ! এমনকি দায়িত্ব পাবার পর জেলায় জেলায় নেতাদের উপর ‘মাতব্বরি’ করার অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছেন বারবার । ফলে দলীয় কর্মীদের সাথে প্রশান্ত বা তাঁর সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক সেইভাবে সহজ হয়নি । কিন্তু তারপরেও কথা থেকে যায় ।
২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের পরে তৃনমূলের রক্তক্ষরণ বন্ধ করার পিছনে প্রশান্ত কিশোরের ভুমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই । ‘দিদিকে বল’ করমসুচির মাধ্যেমে দলীয় কর্মীদের ভাঙ্গন রোধ করে ফের দলকে চাঙ্গা করা ছিল তাঁর মস্তিস্ক প্রসুত । লোকসভা ভোটের পরে দলের কর্মীদের মনোবল এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে নতুন করে মানুষের কাছে যাওয়ার কথা ভাবতেই পারছিলেন না অনেকে। ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি সেই জড়তা কাটিয়ে ফের কর্মীদের মাঠে নামাতে সাহায্য করেছে। এরপরে নির্বাচনের আগে ‘জয় শ্রীরাম’এর বিকল্প হিসাবে ‘খেলা হবে’, কর্মীদের মনোবল ফের চাঙ্গা করেছে ।
এদিকে প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ, দলের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাহায্য করতেই প্রশান্তের যাবতীয় পরিকল্পনা। এই ধারণায় বিশ্বাসী একটু ভারী নেতাদের দু’-এক জন তো সেই কর্মসূচিতে অংশ না নিয়ে কার্যত চ্যালেঞ্জ করে বসলেন প্রশান্তকে। তাঁদের অনেকে এখন তৃণমূলের সঙ্গে নেই। উল্টে তারা বিধানসভা নির্বাচনে তৃনমূলের জোর প্রতিপক্ষ । তবে শেষ পর্যন্ত প্রশান্ত কিশোর নায়কের মর্যাদা পাবেন যদি তৃণমূল আবার ক্ষমতায় আসে । কিন্তু যদি হারে ! সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে ২ মের পর । ততদিন অপেক্ষা করতেই হবে ।