রাজ্যপাল শীতলকুচি দিয়ে শুরু করতে চাইছেন যাত্রা ! ঘোর আপত্তি জানালেন মমতা
রাজ্যপাল শীতলকুচি দিয়ে শুরু করতে চাইছেন যাত্রা ! ঘোর আপত্তি জানালেন মমতা

দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক হিংসা । তৃতীয়বারের মত বাংলার ক্ষমতায় তৃণমূল কংগ্রেস ফিরেছে রেকর্ড সংখ্যক আসনে জয়লাভ করে । কিন্তু কোথাও তৃণমূল, কোথায় বিজেপি আবার কোথাও বা সংযুক্ত মোর্চার কর্মী-সমর্থকরা আক্রান্ত হচ্ছেন । রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা অব্যাহত থাকায় নিজে আক্রান্ত পরিবার এবং সন্ত্রাস কবলিত এলাকা পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । এবার তিনি শুরু করতে চলেছেন শীতলকুচি দিয়ে । কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যেপালের এই সফর নিয়ে আপত্তি করে প্রশ্ন পাধ্যা।

রাজভবনে যেদিন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথ বাক্য পাঠ করান, সেদিন ‘ছোট বোন’ সম্বোধন করে বাংলায় আইনের শাসন কায়েম করা এবং ভোটের পর হিংসা ও সন্ত্রাস বন্ধ করার অনুরোধ করেছিলেন । কিন্তু পরে দেখা গিয়েছে,  রাজ্যের মুখ্য সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবের থেকে এ ব্যাপারে বারবার রিপোর্টও চেয়েও সন্তুষ্ট হতে পারেননি রাজ্যপাল । এরপরেই তিনি সন্ত্রাস কবলিত এলাকা এবং আক্রান্ত পরিবারগুলির সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন । শুরুতেই বৃহস্পতিবার শীতলকুচি ও কোচবিহারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালের এই ‘এক তরফা সিদ্ধান্তে আপত্তি জানালেন ।

বুধবার এই নিয়ে রাজ্যপালের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । সেখানে তিনি তাঁর বক্তব্যে জানিয়েছেন, “সরকারি প্রোটোকল অনুসারে রাজ্যপালের সফরসূচি তাঁর সচিব স্থির করেন। তবে সচিব এ ব্যাপারে সরকার ও যে এলাকায় রাজ্যপাল যাচ্ছেন সেখানকার কমিশনার বা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে নেন। কিন্তু সোশাল মিডিয়া থেকে জানতে পারলাম যে বৃহস্পতিবার আপনি কোচবিহারে যাচ্ছেন। দুর্ভাগ্যের ব্যাপার যে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নিয়ম বা প্রথার কোনও তোয়াক্কা করছেন না আপনি। আমি আশা করব এ ধরনের ফিল্ড ভিজিটে যাওয়ার থেকে আপনি বিরত থাকবেন।” 

রাজ্যসরকারের সাথে রাজ্যপালের বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে । গতবার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের মতবিরোধ বারবার সংবাদের শিরোনামে এসেছে । এমনকি, চিঠি লিখেও মমতা রাজ্যপালকে জানিয়েছেন, রাজ্যপালের পদটি কেবলই একটি সাংবিধানিক আলঙ্কারিক পদ। মুখ্যমন্ত্রী হলেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তাঁকে এড়িয়ে রাজ্যপাল যে ভাবে প্রশাসনের অফিসারদের নির্দেশ দিচ্ছেন তা ঠিক নয়।

এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যপালের যদি কিছু বলার থাকে তাহলে তিনি যেন তাকে বলেন । সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট করে নিজের সিদ্ধান্ত এভাবে প্রকাশ করা যায় না । তবে নবান্ন থেকে যে চিঠি রাজভবনে পাঠানো হয়েছে, সেই চিঠির উত্তর এখনও আসেনি । রাজনৈতিক মহলের ধারনা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই চিঠির পর রাজ্যপালের তরফে অনিবার্য ভাবেই জবাব আসতে পারে। তাতে রাজ্যপাল পাল্টা সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক যুক্তিও দিতে পারেন। তবে একথা ঠিক, যদি রাজ্যপাল নিজের সিদ্ধান্তে কোন জায়গায় গিয়ে বিপদ বা বিক্ষোভের মুখে পড়েন, তাহলে রাজ্য সরকার সেই দায় এড়িয়ে যেতে পারবে এই চিঠির মাধ্যমে । কেন না, তখন, রাজ্যসরকারের পক্ষ থেকে অনায়াসেই বলা যাবে, সরকার আগেই তাঁকে সতর্ক করেছিল।