ঘূর্ণিঝড় যশ (Yaas) এর ক্ষতিপুরনের ২ লক্ষ আবেদন বাতিল করল সরকার !
ঘূর্ণিঝড় যশ (Yaas) এর ক্ষতিপুরনের ২ লক্ষ আবেদন বাতিল করল সরকার !

দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ ঘূর্ণিঝড় যশ (Yaas) এর ক্ষতিপুরন বিলির কাজ শুরু হয়েছে গতকাল থেকে । কিন্তু ‘দুয়ারে ত্রাণ’ প্রকল্পের এই ক্ষতিপূরণ বিলির কাজে প্রথমেই ধাক্কা খেতে হল । জানা যাচ্ছে, মোট ৮ টি জেলা থেকে প্রায় চার লক্ষ আবেদন জমা পড়লেও, যাচাই প্রক্রিয়ায় ২ লক্ষের বেশী আবেদন বাতিল হয়ে গেছে । এই পরিপ্রেক্ষিতে, অনেকেই ‘আম্ফান’ দুর্নীতির আভাস খুঁজতে চাইছেন !

প্রশাসনিক সূত্রে খবর ‘দুয়ারে ত্রাণ’ প্রকল্পে ক্ষতিপুরনের জন্য ৮ টি জেলা থেকে ৩ লক্ষ ৮১ হাজার ৭৭৪ টি আবেদন জমা পড়ে । কিন্তু যাচাই করতে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে গবাদি পশুর যে হিসাব দেওয়া হয়েছে, সেটি যাচাই করা যাচ্ছে না । অনেক ক্ষেত্রে আদৌ যারা আবেদন করেছে, তাদের উল্লেখ করা গবাদি পশুর অস্তিত্ব ছিল কি না সে বিষয়ে সন্দেহ আছে । তাছাড়া, অনেক ক্ষেত্রে গরু ছিল, না ছাগল ! টাই নিয়ে ধন্দে রয়েছে প্রশাসন । এই পরিপ্রেক্ষিতে অরধেকের বেশী

সূচি মেনে বৃহস্পতিবার ক্ষতিপূরণ বিলির কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু এই ‘দুয়ারে ত্রাণ’ কর্মসূচিতে ক্ষয়ক্ষতির আবেদনে গবাদি পশুর উল্লেখের নেপথ্যে পশুর অস্তিত্ব আদৌ আছে কি না, প্রশাসনিক মহল সেই বিষয়ে রীতিমতো ধন্দে। এই প্রেক্ষিতে আটটি জেলা মিলিয়ে জমা পড়া তিন লক্ষ ৮১ হাজার ৭৭৪টি আবেদনপত্রের মধ্যে যাচাই প্রক্রিয়ায় দু’লক্ষের কিছু বেশি আবেদনপত্র বাতিল হয়ে গিয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। এই পরিপ্রেক্ষিতে অর্ধেকের বেশী আবেদন বাতিল করে দিয়েছে প্রশাসনিক কর্তারা ।

সরকার ঘোষণা করা সত্ত্বেও কেন এতগুলি আবেদন বাতিল করা হল ? প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বেশিরভাগ আবেদনপত্রের সাথে উল্লিখিত ক্ষতির পরিমাণের সাথে বাস্তবের কোন মিল তারা খুঁজে পাননি । এছাড়া এমন কিছু ক্ষতিপুরনের দাবী করা হয়েছে, যেগুলি দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পের আওতায় আসবেই না । এদিকে গতবছর আম্ফানের ক্ষতিপূরণ করার সময় স্বজন পোষণের দুর্নীতি উঠে আসে । এক জেলা-কর্তা বলেছেন, ‘আমপান-পরবর্তী পর্যায়ে যাচাইয়ের সময় প্রায় ছিলই না। তাড়াহুড়োয় অনেক সমস্যা হয়েছিল। কিন্তু এ বারের পদ্ধতি রীতিমতো পরিকল্পনা এবং সময়মাফিক ছিল। ফলে আবেদনপত্রের সবিস্তার যাচাইয়ের সুযোগ পাওয়া গিয়েছে।’

কার কতখানি ক্ষতি হয়েছে যাচাই করার সময় দেখা গেছে, আবাদি জমি, কিম্বা ঘর বাড়ির ক্ষতি কিছুটা যাচাই করা সম্ভব । কিন্তু গবাদি পশু সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির যাচাইকরণ করা সম্ভব হচ্ছে না । কেননা, কার কতগুলি গবাদি পশু ছিল তার প্রমান্য নথি থাকছে না । এছাড়াও নিয়মের যাঁতাকলে পড়ে অনেকেই ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হবেন ।  ‘স্টেট ডিজ়াস্টার রিলিফ ফান্ড’ (এসডিআরএফ)-এ উল্লিখিত নিয়ম অনুযায়ী,  ক্ষতিপূরণ হিসেবে দুধ দিতে পারে, এমন সর্বাধিক তিনটি বড় পশু এবং ৩০টি ছোট পশুর আর্থিক মূল্যই বিবেচ্য হবে। সেক্ষেত্রে এগুলির প্রমাণ দেওয়া অনেকের পক্ষেই সম্ভব হচ্ছে না ।

ঘূর্ণিঝড় যশ (Yass) এর কারনে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্য সরকারের দাবী করা ক্ষতিপুরন নিয়েও সমস্যা রয়েছে । ২০ হাজার কোটি টাকা দাবী করা হলেও, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি দল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা তদন্ত করে দেখেছেন । কিন্তু সেই রিপোর্ট এখনও তৈরি হয়নি । এদিকে, ‘দুয়ারে ত্রাণ’ প্রকল্পে ফের অনিয়ম হলে রাজ্যের বিরোধী শিবির ছেড়ে কথা বলবে না । তবে বৃহস্পতিবার  ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতির জন্য প্রায় ৫০০০ যোগ্য আবেদনকারীর অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের অর্থ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।