অস্থায়ীভাবে দাহ করার জায়গা তৈরি হচ্ছে
অস্থায়ীভাবে দাহ করার জায়গা তৈরি হচ্ছে

দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সুনামির রূপ নিয়ে আছড়ে পড়েছে ভারতে । অথচ একবছর আগেও পরিকল্পিতভাবে লকডাউন এবং সরকারী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে করোনা মোকাবিলায় গোটা বিশ্বে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছিল ভারত । অথচ বছর পার হতে না হতেই চিত্রটা সম্পূর্ণভাবে বদলে গেল । রাজধানী দিল্লীতে চিতার আগুন নিভছেই না, বেড়েই চলেছে মৃতদেহের সারি । দিন রাত কাজ করেও শ্মশান কর্মীরা শেষ করতে পারছে না কাজ ।

রাজধানী দিল্লীতে করোনার চিত্র সবচেয়ে মারাত্মক আকার ধারন করেছে । বিগত কয়েক মাস ধরে চলতে থাকা কৃষক আন্দোলন করোনার দ্বিতীয় ঢেউকে আরও অনেক শক্তিশালী করে তুলেছে । হাসপাতালের বাইরে বসে পরিজনদের দেখতে হচ্ছে অক্সিজেন না পেয়ে তাদের কাছের মানুষের অসহ্য যন্ত্রণার মৃত্যু । বিশ্ব সংবাদ মাধ্যম বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রতিদিন শত শত মানুষ দিল্লীতে করোনায় মারা যাচ্ছে । পরিস্থিতি সামাল দিতে  শ্মশানের পরিসর বাড়ানোর সঙ্গে পার্কেও গড়ে তোলা হচ্ছে চিতার অবকাঠামো।

গত কয়েকদিন ধরে ভারতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখের বেশি । গুরুতর কোভিড রোগীদের প্রাণরক্ষায় অপরিহার্য অক্সিজেনের ঘাটতি রয়েছে। সংকট দেখা দিয়েছে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) শয্যা ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধের। এদিকে করোনায় মারা যাবার যে সরকারী হিসাব পেশ করা হচ্ছে, ধারনা করা হচ্ছে প্রকৃত মারা যাচ্ছে তার থেকে অনেক বেশি । NDTV র পক্ষ থেকে গত সপ্তাহেই জানানো হয়েছে, গত সপ্তাহে দিল্লিতে অন্তত ১ হাজার ১৫০ জনের করোনায় মৃত্যুর তথ্য কর্মকর্তাদের হিসাবের বাইরে রয়ে গেছে।

জানা গেছে, মৃতদেহের সৎকার করতে দিল্লী সরকার শবদাহে চিতার অবকাঠামো তৈরি করার জন্য পার্কিং লট, পার্ক ও খোলা মাঠ ব্যবহার করতে চলেছে । ইতিমধ্যে দিল্লির সরাই কালে খান শ্মশানে নতুন অন্তত ২৭টি চিতার অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। আরও ৮০টি তৈরি করা হয়েছে পার্কে। পৌর কর্তৃপক্ষ যমুনা নদীর তীরে দাহ করার আরও জায়গা খুঁজছে।

এছাড়াও পূর্ব দিল্লির ঘাজিপুর শ্মশানে পার্কিংয়ের জায়গায় ২০টি চিতার অবকাঠামো নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। আরও চিতার অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। একটি শব দাহ করতে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যায়। সে কারণে মরদেহ নিয়ে আসা স্বজনদের জন্য তিন থেকে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অন্যান্য শ্মশানের অবস্থাও গুরুতর। হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থাও বেশ সঙ্কটজনক। এই মুহূর্তে দুই কোটি মানুষের নগরী দিল্লিতে হাসপাতালগুলো কোনো শয্যা ফাঁকা নেই। অক্সিজেনও হয়ে উঠেছে দুষ্প্রাপ্য।   ফ্রান্স অক্সিজেন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। আমেরিকার ‘পূর্ণ সহযোগিতার’ আশ্বাস দিয়েছেন জো বাইডেন। এরমধ্যে ভাল খবর, টিকা তৈরির কাঁচামাল বিদেশে পাঠানোর ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞাও তুলে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদন বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হবে।