সংবাদ মাধ্যমে স্পষ্ট বিবৃতি দেবার পর তন্ময়কে নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করল সিপিএম
সংবাদ মাধ্যমে স্পষ্ট বিবৃতি দেবার পর তন্ময়কে নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করল সিপিএম

দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ বাম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য সুবক্তা এবং স্পষ্টবাদী হিসাবে পরিচিত । রবিবার রাজ্য বিধানসভার ভোটগণনার শেষ পর্যায়ে দেখা গেল আড়ম্বর করে জোট বাঁধা বাম-কংগ্রেসের ভাঁড়ারে কোন আসন জোটেনি । ঠিক সেই সময় একটি সংবাদ মাধ্যমে নিজের স্পষ্ট মতামত জানিয়ে রীতিমত বিস্ফোরণ ঘটালেন বাম নেতা তন্ময়বাবু । এর পরেই দলের মধ্যে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে, সিপিএমের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এই সদস্যকে নিয়ে এবার কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে !

রবিবার একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমে এবারের উত্তর দমদম কেন্দ্রের সংযুক্ত মোর্চা প্রার্থী বাম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য রীতিমত কামান দেগেছিলেন আলিমুদ্দিনের দিকে ! এবার সিপিএমএর পক্ষ থেকে দলীয় নেতার সেই মন্তব্য নিয়ে বিবৃতি দেওয়া হল ।সিপিএমের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “তন্ময় ভট্টাচার্য ওই টক শোয়ে যা বলেছেন তা তাঁর ব্যক্তিগত মত। পার্টি পরিচালনা ও নেতৃত্বের বিষয়ে যা বলেছেন তন্ময় ভট্টাচার্য সে ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

ঠিক কি ঘটেছিল রবিবার সন্ধ্যায় ? সেদিন দলের এমন ভরাডুবি দেখে তন্ময় জানান, ‘এই ব্যর্থতার দায় নেতৃত্বের। আমাদের নয়। নিচু তলার কর্মীদের নয়। লোকসভায় শূন্য হওয়ার পর কেউ দায় নেননি। বিধানসভায় হারের পর কেউ দায় নেবেন না। শুধু স্তালিন কপচাবেন তা হবে না। এটা স্তালিনের যুগ নয়।’ এখানেই থেমে না থেকে তিনি আরও জানান, ‘দলের সর্বক্ষণের কর্মীরা চার-পাঁচ হাজার টাকা ভাতা পান। তাঁদের কেন দৈনিক মজুরির নিয়ম মেনে ২১ হাজার টাকা দেওয়া হবে না।’

এর আগেও এই বাম বিধায়ককে দলীয় সিদ্ধান্ত থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে । আইএসএফের সঙ্গে জোট নিয়েও এক পলিটব্যুরোর সদস্যকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন তন্ময়। বাম নেতৃত্বের দাবী, তন্ময় বাবু এর আগেও যে কথা দলের মধ্যে আলোচনা করা উচিৎ, সেটি প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন । কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য থাকাকালীন তন্ময় ভট্টাচার্যকে সীতারাম ইয়েচুরিকে রাজ্যসভায় না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছিল । সেই সময় তিনি বলেছিলেন, “দিল্লির নেতাদের মাথায় ক্যাড়া পোকা আছে। তাঁরা সীতারামের জনপ্রিয়তাকে হিংসা করেন।”

দলের মধ্যেই এখন কানাঘুষো শুরু হয়েছে, তন্ময়কে নিয়ে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ? তাঁর নিজের দলীয় বেশ কিছু নেতার মতে, হেরে গেছেন বলেই নাকি তিনি এই সব কথা শুরু করেছেন ! এর আগেও দল থেকে তন্ময়বাবুকে সমালোচিত হতে দেখা গেছে। ২০১৬ সালে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সাথে আসন ভাগাভাগি নিয়ে তিনি বিতর্কিত মন্তব্য করেন । সেই সময় দিল্লী থেকে কংগ্রেসের সাথে আসন সমঝোতা নিয়ে বলা হয়েছিল, এটা কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়! কিন্তু পরে দেখা গেল, কংগ্রেসের ডাকা মিছিলে একা হাজির হয়েছিলেন তন্ময়। এই ঘটনায় দলের তরফ থেকে প্রকাশ্যে প্রবলভাবে সমালোচিত করা হয়েছিল তাকে । রবিবারের মন্তব্যের পর এবার তাকে নিয়ে বাম নেতৃত্ব কি ব্যবস্থা নিতে চলেছে এখন তাই নিয়ে চলছে জল্পনা ।