দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ বাংলাদেশে বিএনপির ক্ষেত্রে ফের বড় ধাক্কা আসতে চলেছে । এবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারদের অন্যতম প্রয়াত জিয়াউর রহমানকে দেওয়া ‘বীরোত্তম’ খেতাব বাতিলের পথে হাঁটতে চাইছে, সেদেশের জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। যুক্তি হিসাবে জামুকার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন । তাঁর হাত ধরে রাজাকারদের রাজনীতিতে প্রবেশ হয়েছে ।
জিয়াউর রহমানের নামে ‘বীরোত্তম’ খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়াও জামুকা (জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল)-এর বৈঠকে খোন্দকার মোশতাক আহমেদের নাম থেকে ‘স্মরণীয় বরণীয়’ খেতাব তুলে নেবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । উল্লেখ্য, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে খোন্দকার মোশতাক আহমেদের বিশেষ অবদানের জন্য ‘স্মরণীয় বরণীয়’ খেতাব দেওয়া হয় ।
জামুকা (জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল)এর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, কার্যকর করতে হলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে । এ বিষয়ে জামুকার সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খান জানিয়েছেন, “বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ও দণ্ডপ্রাপ্ত খুনিদের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ওই হত্যাকাণ্ডে মদদ দেয়ার কারণে জিয়াউর রহমানের খেতাবও বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা”।
এদিকে জিয়াউর রহমানের ‘বীরোত্তম’ এবং খোন্দকার মোশতাক আহমেদের ‘স্মরণীয় বরণীয়’ খেতাব এভাবে বাতিল করা যায় কিনা তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । জামুকার এ সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেনারেল জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের চরম অবমাননার শামিল এবং জিয়াউর রহমানের বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য পাওয়া খেতাব বাতিলের অধিকার কারও নেই ।
বাংলাদেশে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে পার্টির সদস্যরা ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ বলে দাবি করেন । জামুকার পক্ষ থেকে জামুকার আরেকজন সদস্য এবং সংসদের অনুমিত হিসাব কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদ বলেছেন, এভাবে মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য কারও খেতাপ কেড়ে নেওয়া যেতে পারে । উদাহরণ হিসাবে তিনি জানান, প্রফেসর ইব্রাহিমকে ‘নিশানে পাকিস্তান’খেতাব দিয়েছিলো পাকিস্তান। কিন্তু পরবর্তীতে ছয় দফা আন্দোলনকে সমর্থন করায় সেটি আবার কেড়েও নিয়েছিলো পাকিস্তান। তাঁর মতে, “কেউ একবার খেতাব পেলেও পরবর্তীতে তার কার্যক্রম দেশ ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে গেলে সরকার তো সেটি প্রত্যাহার করতেই পারে” ।
সুত্রঃ বিবিসি বাংলা