দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ জাতীয় দলের হয়ে মেসির মাথায় শিরোপার মুকুট উঠবে – এই অপেক্ষায় ছিল অসংখ্য ভক্ত! অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান । সুদীর্ঘ ২৮ বছর অপেক্ষা করার পর কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে স্বপ্নের ট্রফি ছিনিয়ে নিল আর্জেন্টিনা।
রবিবার ভোর রাত থেকেই কোটি কোটি মানুষের চোখ আটকে ছিল টিভির পর্দায় । ভারতীয় সময় ভোর সাড়ে ৫ টার ঐতিহাসিক মারাকানায় শুরু হওয়া কোপা আমেরিকার ফাইনালের ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ান হল আর্জেন্টিনা। স্বপ্নের গোলটি এল ডি মারিয়ার বা পায়ের একটি দুর্দান্ত শট থেকে। উত্তেজনাপূর্ণ এই খেলায় ২২ মিনিটের মাথায় ব্রাজিলের রক্ষনভাগ ভেদ করে এই গোলটি করেন তিনি ।
খেলার শুরুতে মারাকানা স্টেডিয়ামে দাপট অবশ্য ব্রাজিল দেখাতে শুরু করে । প্রথমভাগের ৬০ ভাগ সময় বল দখলে রেখেছিল নেইমার বিগ্রেড ! কিন্তু আক্রমণে এগিয়ে থাকলেও কাজের কাজ করে দেন ডি মারিয়া । দেখা গেছে পুরো ম্যাচে ১৩টি শট নিয়েছে ব্রাজিল, যার মধ্যে দুটি ছিল জালে বল জড়িয়ে দেবার মত শট । অপরদিকে, মেসির আর্জেন্টিনার পাঁচ শটের মধ্যে লক্ষ্যে যাওয়ার মতো ছিল দুটি। যার একটি সফল হয়েছে ।
মারাকানায় কোপা আমেরিকা ফাইনালে প্রথম থেকেই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মধ্যে ছিল চরম উত্তেজনা । শুরু থেকেই ফাইনাল খেলা ফাউলে ভরপুর ছিল । খেলা শুরু হতে না হতেই হলুদ কার্ড দেখলেন ব্রাজিল তারকা ফ্রেড। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে মন্তিয়েলকে ফাউল করায় ফ্রেডকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। গোটা ফাইনাল খেলায় ২১ বার ফাউল করেছে ব্রাজিল, ১৯ বার ফাউল করেছে আর্জেন্টিনা।
খেলা শুরু হতেই ১৩ মিনিটের মাথায় প্রথম সুযোগ পায় ব্রাজিল। প্রতিপক্ষের ডি বক্সে নেইমারের দিকে বল বাড়িয়ে দেন রিচার্লিসন।কিন্তু ওতামেন্দির তৎপরতায় সফল হতে পড়েনি ব্রাজিল। এরপর ম্যাচের ২২ মিনিটেই গোল পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মাঝমাঠ থেকে ডি মারিয়ার দিকে বল বাড়ান দি পল। বল নিয়ে প্রতিপক্ষের ডি বক্সের কাছ থেকে বাঁ পায়ের দারুণ শটে ব্রাজিল গোলকিপার এডারসনের মাথার উপর দিয়ে জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি ।
এরপর ৩২ মিনিটে আরও একটি ভাল সুযোগ পেয়েও আর্জেন্টিনা মিস করে । মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে ছুটে যান মেসি। বলে শটও নেন। কিন্তু গোল পোস্টের একেবারে পাশ ঘেঁসে গোলার মত বেরিয়ে যায় মেসির সেই শট । এর এক মিনিট পরেই ফ্রিকিক পায় ব্রাজিল । কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাজিল । এরপর খেলার ৪২ মিনিটের মাথায় আরও একটি ভাল সুযোগ পায় নেইমার টিম । কিন্তু এটাও কাজে লাগেনি ।
বিরতির পর নিজেদের আরও গুছিয়ে নিয়ে আক্রমণের পথে যায় ব্রাজিল । ৪৮ মিনিটের মাথায় রিচার্লিসন আক্রমণে যান। তবে সফল হতে পারেননি। ৫১ মিনিটের মাথায় হলুদ কার্ড দেখেন অর্জেন্টিনার লো সেলসো। এর পরের মিনিটে আর্জেন্টিনার জালে বল জড়ান রিচার্লিসন। কিন্তু এদিন ভাগ্যদেবী হয়ত আর্জেন্টিনার পক্ষেই ছিলেন । অফসাইডের জন্য রেফারি গোল বাতিল ঘোষণা করেন ।
আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে গোটা ফাইনাল ম্যাচটি ভরপুর ছিল ।হলুদ কার্ডের ছড়াছড়ি আর উত্তাপের মধ্যে শেষ হাসিটা আর্জেন্টিনা হাসে । সুদীর্ঘ ১৪ বছর পর ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা এই কপা আমেরিকার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল । সেবার ব্রাজিল কোপা আমেরিকার শিরোপা অর্জন করে । ২০১৪ সালে আর্জেন্টিনা এই মারাকানা স্টেডিয়ামে ফাইনালে ওঠে । কিন্তু জয় হাতছাড়া থাকে। দীর্ঘ ২৮ বছর অপেক্ষার পর অবশেষে কোপা চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।