জনপ্রিয়তায় মোদীর আগে মমতাকে স্থান দিল RSS, রাজ্যে বিজেপির হারকে বিপর্যয় বলে উল্লেখ
জনপ্রিয়তায় মোদীর আগে মমতাকে স্থান দিল RSS, রাজ্যে বিজেপির হারকে বিপর্যয় বলে উল্লেখ

দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ বাঙ্গালিয়ানার নিরিখে মোদী-অমিত শাহের জনপ্রিয়তা মমতার কাছে হেরে গেছে । রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব মমতার সাথে টক্কর দেবার মত কোন মুখ তুলে ধরতে পারেনি । এমনটাই আর.এস.এস এর মুখপত্রে বিশ্লেষণ করা হয়েছে । ২০১৯ শের লোকসভা নির্বাচনে দারুণ ফল করার পর ২০২১ শে এসে মুখ থুবড়ে পড়ার কারন হিসাবে বেশ কিছু কারন উল্লেখ করা হয়েছে । যার অধিকাংশ, বাংলার আদি বিজেপি নেতাদের যুক্তির সাথে খাপ খেয়েছে ।

অবশেষে বাংলায় বিজেপির হারের কারন বিশ্লেষণ প্রকাশ হল সঙ্ঘের মুখপত্রে । সেখানে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের রেকর্ড মাত্রায় আসন নিয়ে জয়লাভের সম্পূর্ণ কৃতিত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি, শাসক দল থেকে কোন বাদ বিচার না করে, তাদের কার্যকারিতা বিচার না করে লোক ভাঙ্গিয়ে আনার নীতিকে হারের জন্য দায়ী করা হল সঙ্ঘের নির্বাচনোত্তর বিশ্লেষণে। অবশ্য, ২০১৬র ৩ আসন থেকে বেড়ে ৭৭ হওয়াকে ‘ইতিবাচক’ বলেই দেখাতে চাইছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব। কিন্তু আর.এস.এস-এর বিশ্লেষণে জানানো হল,  বাস্তবতার নিরিখে বিজেপি নেতৃত্বের ওই মত ‘অতিশয়োক্তি’ ।

বর্তমানে ভারত বর্ষে তথা গোটা বিশ্বে বৃহত্তম দল বিজেপির চালিকা শক্তি আর.এস.এস । বাংলার নির্বাচনে বিজেপির ২০০ পার হবার স্বপ্ন অধরা থাকার পিছনে কারন বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে তারা । সেখানে বলা হয়েছে, বিজেপির এ বারের জয়ী ৭৭ জন বিধায়কের মধ্যে তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেস ছেড়ে আসা মুখ আছেন ৩২ জন। এছাড়া, ২০১৯ শের লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় গেরুয়া শিবিরের ভোট মাত্র ২ শতাংশ কমেছে । কিন্তু বাম ও কংগ্রেস থেকে ৫% ভোট তৃণমূলের দিকে চলে গিয়ে সব হিসেব উল্টে দিয়েছে। তার সঙ্গেই যোগ হয়েছে বিজেপির ভুল নীতি এবং অন্তত দু’দফার ভোটে কোভিড পরিস্থিতির প্রভাব।

নিজেদের মুখপত্রে আর.এস.এস যে পরিসংখ্যান দিয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি যেখানে ১২১টি বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে ছিল, সেখান থেকে ২০২১-এ ৭৭ আসনে নেমে আসাকে খারাপ ফল বলেই ধরতে হবে। তাদের বিশ্লেষণে, ৬৫টি এমন বিধানসভা আসন আছে, সেখানে ২০১৯ ও ২০২১— দু’বারই জয় ধরে রাখতে পেরেছে বিজেপি। মোট ১২টি আসন আছে, যেখানে দু’বছর আগে না পারলেও এ বার জয় পেয়েছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু ৫৬টি আসনে দু’বছর আগে এগিয়ে থেকেও এ বার ভোটে তা হাতছাড়া হয়েছে। এই ক্ষেত্রে বিজেপির বিপর্যয় এবং তৃণমুলের জন্য ‘সেফ প্যাসেজ’ হয়েছে ।

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আর.এস.এস এর পক্ষ থেকে ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে । মেনে নেওয়া হয়েছে, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক উচ্চতার সঙ্গে বিজেপির রাজ্য স্তরের কোনও নেতা খাপ খাওয়াতে পারেননি’। সঙ্ঘের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তৃণমূল খারাপ লোকেদের দল কিন্তু তাদের মাথায় ভাল নেত্রী আছেন— এই রকম সাধারণ ধারণা মানুষের মনে কাজ করেছে। এমনকি, বিজেপি সমর্থকদের মধ্যেও তৃণমূল নেত্রী সম্পর্কে ভাল ধারণা কাজ করেছে। মমতার রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও জনপ্রিয়তার সঙ্গে পাল্লা দেওয়া যায়নি। এই সূত্রেই বলা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহেরা জনপ্রিয় হলেও বাঙালিয়ানার সঙ্গে মেলেনি বলে তাঁদের জনপ্রিয়তা বাংলায় কাজে আসেনি!