'যেন ভেমরুলের চাকে ঘা দিয়েছে হামাস'! একের পর এক ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রে তছনছ হচ্ছে গাজা!
'যেন ভেমরুলের চাকে ঘা দিয়েছে হামাস'! একের পর এক ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রে তছনছ হচ্ছে গাজা!

দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ খোঁচা দিয়ে নিজেদের বিপত্তি ডেকে নিয়ে এসেছে প্যালেস্টাইন ! এখন ইসরায়েলকে কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না । একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র উড়ে এসে আঘাত হানছে গাজায় । ইতিমধ্যে ইজরায়েলী হামলার বিরুদ্ধে একজোট হবার আহ্বান জানিয়েছে তুরস্কসহ বেশ কিছু মুসলিম দেশ । কিন্তু কোন ভয়ের চিহ্ন এখন প্রকাশ পায়নি ইসরায়েলীদের মধ্যে।

বুধবার হামাস সশস্ত্র গোষ্ঠি ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বিমান হামলার জবাবে প্রায় এক হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছিল । সেই হামলায়, বেশ কিছু ক্ষতি হয় ইহুদিদের । ইসরাইলের গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল জানায়, হামাসের ক্ষেপণাস্ত্রে এক সামরিক কর্মকর্তাসহ আরো দুই সেনা নিহত হয়েছে। বুধবাররে ঐ হামলায় ওহম তাবিব নামে স্টাফ সার্জেন্ট পদবির ওই ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তা নাহাল ইনফ্রান্টি ব্রিগেডের ৯৩১ ব্যাটিলিয়নের সদস্য। এরপরেই ইজরায়েলী সেনাবাহিনি রনং দেহি মূর্তি ধারন করেছে ।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের পর ইসরাইল-হামাসের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ লড়াই। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, বুধবার ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ১৪ শিশুসহ ৫৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিন শতাধিক। ইসরায়েলি হামলায় গাজার একটি বহুতল ভবন ভেঙে পড়েছে। আরেকটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বুধবারের পর থেকে, ফিলিস্তিনে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। ঈদুল ফিতরের দিনেও ইসরায়েলি বোমারু বিমানগুলো গাজা উপত্যকায় উড়ে গিয়ে বারবার বোমা ফেলে সব তছনছ করে দিচ্ছে । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনও পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে ৮৩ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১৭ শিশু ও ৮ নারী রয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪৮০ জন।

গাজা উপতক্যায় একের পর এক ইসরায়েলী ক্ষেপণাস্ত্রে তছনছ করে দিচ্ছে সবকিছু

ইসরায়েলের এই রনং দেহি মূর্তি দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে অধিকাংশ মুসলিম দেশ । এশিয়া থেকে একমাত্র পাকিস্তান থেকে নিন্দা জানানো হয়েছে । গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আক্রমণ ঠেকাতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের আরেকটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু দখলদার দেশটির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতায় বুধবারের (১২ মে) এ বৈঠক থেকে কোনো বিবৃতি দেওয়া সম্ভব হয়নি। নিজের নাম গোপন করে এক কূটনীতিক বলেন, উদ্বেগ দেখানোর জন্য নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠককেই যথেষ্ট বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। কোনো বিবৃতিতে উত্তেজনা কমবে বলে তাদের ধারনা ।

এদিকে বেশ কিছু মুসলিম দেশ ইসরায়েলী আক্রমণের বিরুদ্ধে একজোট হবার আহ্বান জানিয়েছে । অন্যদিকে ইউরোপের চার দেশ নরওয়ে, ইস্তোনিয়া, ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ডের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে গাজা থেকে হামাসের রকেট হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। এটা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং তাৎক্ষণিকভাবে তা বন্ধ করতে হবে।গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় শিশুসহ বিপুল সংখ্যক বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি এবং গাজা থেকে রকেট হামলায় ইসরায়েলে হতাহত—দুটোই হতাশাজনক ও অগ্রহণযোগ্য।” বিবৃতিতে ওই চার দেশ আরও জানায়, “আমরা পূর্ব জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনে অবৈধ বসতিস্থাপন, ধ্বংসযজ্ঞ ও উচ্ছেদ বন্ধে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

তবে হামাসের আক্রমণের বিরুদ্ধে যেভাবে ইসরায়েল ক্ষেপণাস্ত্র থেকে শুরু করে বিমান হানা করছে, তাতে খুব তাড়াতাড়ি ইহুদিদের ঠাণ্ডা করা যাবে বলে মনে করছেন না কূটনৈতিক মহল । এমনিতেই ইহুদিরা নিজেরাই স্বয়ং সম্পূর্ণ । ফলে অন্য কোন দেশের সাহায্য ছাড়াই একাই লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যেতে পারবে । এখন প্যালেস্টাইনের অবস্থা হয়েছে, অনেকটা ভিমরুলের চাকে ঢিল মারার মত অবস্থা ।