সরকারী ভর্তুকি বন্ধ করার ইচ্ছা প্রকাশ বিদ্যুৎ মন্ত্রীর ! বিল নিয়ে চিন্তায় গ্রাহকরা
সরকারী ভর্তুকি বন্ধ করার ইচ্ছা প্রকাশ বিদ্যুৎ মন্ত্রীর ! বিল নিয়ে চিন্তায় গ্রাহকরা

দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ তৃতীয় বারের মত ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মন্ত্রীসভা ঢেলে সাজিয়েছেন। এবারের বিদ্যুৎ মন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত হয়েছেন, অরুপ বিশ্বাস । দায়িত্ব পাবার পর প্রথম বিদ্যুৎ ভবনে এসে প্রথম বৈঠকেই জানিয়ে দিলেন, রাজ্যের বিদ্যুৎ সংস্থাগুলিকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে । আগামদিনে বিদ্যুতের উপর ভর্তুকি কমানো হবে ! নতুন বিদ্যুৎ মন্ত্রীর এই ইচ্ছাপ্রকাশ নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা । তবে কি আগামী দিনে বিদ্যুৎ বিল আরও বেড়ে যাবে !

শপথ গ্রহণের পরে রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী হিসাবে অরূপ বিশ্বাস বিদ্যুৎ ভবনের আধিকারিকদের সাথে বৈঠকে বসেন । সেখানে আগামী দিনে কিভাবে বিদ্যুৎ সংস্থাগুলিকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সেই বিষয়ে বৈঠক করেন। এর পর সাংবাদিক সাথে কথা বলার সময় নতুন বিদ্যুৎ মন্ত্রী জানান, রাজ্য বিদ্যুত্‍ বন্টন সংস্থাকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। ধীরে ধীরে সরকারি ভর্তুকি কমানো হবে। দিনের পর দিন সরকারি ভর্তুকির ওপর নির্ভর করে কোনও সংস্থা চলতে পারে না।

বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের এই মন্তব্যের পরেই বিভিন্ন মহল থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে । যদি সরকার বিদ্যুতের উপর থেকে সরকারী ভর্তুকি তুলে নেয় কিম্বা কমিয়ে দেয়, তাহলে গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ বিল অনেকটাই বেশী আসবে । ফলে চড়া হারে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে আরও বিপাকে পড়ার সম্ভবনা গ্রাহকদের । এদিকে নির্বাচনের আগে, রাজ্যের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের জন্য সরব হয়েছিল বিরোধী দল বিজেপি । এমনকি নির্বাচনী ইস্তেহারে বলা হয়েছিল, তাদের সরকার ক্ষমতায় এলে বিদ্যুতের বিল কমানো হবে । ফলে আগামিদিনে একটা আন্দোলনের পথ তৈরি হচ্ছে ।

বিদ্যুৎ ভবনের আধিকারিকদের সাথে বৈঠকের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত বিদ্যুৎমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন,

  • বর্তমানে  WBSEDCL প্রতি তিন মাস অন্তর গ্রাহকদের কাছ যে বিল পাঠায়, সেখানে সর্বনিম্ন হার শূন্য থেকে ১০২ ইউনিট গ্রামাঞ্চলে ৫.২৬ টাকা আর শহরাঞ্চলে ৫.৩৭ টাকা। সর্বোচ্চ হার ৯০০ ইউনিটেড ওপরে গ্রামাঞ্চলে ও শহরাঞ্চলে ইউনিট প্রতি দিতে হয় ৮.৯৯ টাকা। যা প্রত্যেকটি ধাপেই বেসরকারি বিদ্যুত্‍ বন্টন সংস্কার থেকে অনেকটাই কম।
  • বিগত সরকারের আমলেই রাজ্য বিদ্যুত্‍ বন্টন সংস্থাকে আলাদা আলাদা কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। ১) PDCL অর্থাত্‍ পাওয়ার ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড। ২) WBSEDCL যা মূলত ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক প্রয়োজনে বিদ্যুত্‍ বন্টন এর কাজ করে। ৩) SETCL অর্থাত্‍ থার্মাল কর্পোরেশন লিমিটেড যা মূলত রাজ্যের হাতে থাকা তাপবিদ্যুত্‍ উত্‍পাদন কেন্দ্র গুলি কে নিয়ন্ত্রণ করে।

সাংবাদিকদের সামনে অরূপ বিশ্বাসের বক্তব্য নিয়ে বিদ্যুৎ পর্ষদের সাথে যুক্ত একাধিক আধিকারিক জানিয়েছেন, অকারণেই মন্ত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। বিদ্যুত্‍ উত্‍পাদন এবং তাপ বিদ্যুত্‍ কেন্দ্রগুলো যাতে স্বয়ং নির্ভর হতে পারে তার জন্য চেষ্টা করা হবে। আর জোর দেওয়া হবে বকেয়া বিদ্যুত্‍ বিল আদায়ের দিকে। তবে বিরোধী দল বিজেপির পক্ষ থেকে জানা গেছে, এখনই আন্দোলনের পথে যেতে চাইছে না তারা । তবে সব দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। বেসরকারি বিদ্যুত্‍ বন্টন সংস্থার পাশাপাশি রাজ্য বিদ্যুত্‍ পর্ষদও আগামী দিনে তাদের প্রতিবাদের টার্গেট হতে পারে।