দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ বিধানসভা ভোটের আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘আমরা দাদার অনুগামী’ বলে বেশ গুঞ্জন উঠেছিল ! এবার বিপুল জন সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসার পরে শুভেন্দু অধিকারীর সেই পূর্ব মেদিনীপুর নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী । তৃনমূলের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে রীতিমত ঝাড়াই বাছাই পর্ব । ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে ।
একসময়ে বামেদের শক্ত ঘাঁটি ছিল পূর্বমেদিনীপুর । কিন্তু এর পরেই সেখানে অধিকার কায়েম করেছে ‘অধিকারী পরিবার’ ।বুথ কমিটি থেকে শুরু করে জেলা কমিটি— সর্বত্রই নিয়ন্ত্রণ ছিল অধিকারীদের হাতে । এবারের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হবার পর দেখা গেছে, সেখানকার ১৬টি আসনের মধ্যে ৭ টি আসন বিজেপির পক্ষে গেছে । এর কারন হিসাবে উঠে আসছে, ‘শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ’ দের ‘অন্তর্ঘাত’-এর বিষয় । ফলে শাসকদলের পক্ষ থেকে এবার দলে যেসব শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ আছে, তাদের চিহ্নিত করে ‘শাস্তি’ দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে ।
ভোট পর্ব মিটে যেতেই এবার পূর্বমেদিনীপুরকে অধিকারী পরিবারের থেকে প্রভাব মুক্ত করার উদ্যোগ নিল মমতা সরকার । এই মুহূর্তে জোড়াফুল শিবিরের অন্দরের একাংশ ধারনা করছেন, শুভেন্দুর ‘বশ্যতা’ না মানায় এক সময় যাঁরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন, জেলায় দলের কর্তৃত্ব এখন তাঁদের হাতেই। একসময় শুভেন্দু অধিকারীর পরোক্ষ চাপে পড়েই পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় চলে যেতে হয়েছিল সৌমেন মহাপাত্রকে । এখন তিনি তৃণমূল জেলা সভাপতির দায়িত্বে আছেন । তৃনমূলের পূর্ব পাঁশকুড়া এবং তমলুক কেন্দ্র পুনরুদ্ধার করার পিছনে এই সৌমেন মহাপাত্রের অবদান রয়েছে । তবে নন্দীগ্রাম কেন্দ্র সহ অন্যান্য কেন্দ্রে তৃনমূলের যে হার হয়েছে, এখন তার ময়না তদন্ত শুরু করা হয়েছে । ধারনা করা হচ্ছে, যে সমস্ত আসনে হার হয়েছে সেখানকার অনেক নেতাই তৃণমূলে থেকেও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ‘দাদার অনুগামী’র ভূমিকা পালন করেছেন।
তৃনমূলের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবার দলের মধ্যেই অন্তর্ঘাতের সাথে যুক্ত নেতাদেরবেছে বেছে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে । ইতিমধ্যে শুক্রবার সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে খেজুরির প্রাক্তন বিধায়ক রণজিত্ মণ্ডল এবং জেলা পরিষদের মত্স্য কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় অধিকারীকে। জোড়া ফুলের জেলা সভাপতি সৌমেন বলছেন, ”হেরে যাওয়া ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রেই পৃথক ভাবে পর্যালোচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট হাতে এলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট হাতে এলেই দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”