দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ মাঝ পথে কোটিপতির খেলা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে বিসিসিআই । আর এর ফলে প্রায় ২০০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি স্বীকার করে নিতে হচ্ছে । অথচ এমনটা হবার কথা ছিল না । প্রতিটি ক্রিকেটারকে জৈব বলয়ের সুরক্ষা কবচের মধ্যে রাখা হয়েছিল । অথচ সেই সুরক্ষা বলয় ভেদ করেই একাধিক ক্রিকেটার আক্রান্ত হলেন করোনায় । ফলে একান্ত বাধ্য হয়েই অনির্দিষ্টকালের জন্য ২০২১ আইপিএল স্থগিত করার ঘোষণা করতে হয়েছে । এবার কেন ক্রিকেটাররা আক্রান্ত হয়েছে, এবং আইপিএল বন্ধ করতে কেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বাধ্য হল ! এর পিছনে উঠে এসেছে একাধিক কারন ।
আইপিএল চলাকালীন খেলোয়াড় এবং কর্মীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে । আতঙ্কিত হয়ে পড়ে বিভিন্ন টিম । বিদেশী ক্রিকেটাররা খেলা বাদ দিয়ে নিজেদের দেশে ফিরে যেতে চাইলেন । এই অবস্থায় আর আইপিএল চালানো সম্ভব হল না । জৈব বলয়ের মাঝেই কলকাতা নাইট রাইডারস-এর বরুণ চক্রবর্তী এবং সন্দীপ ওয়ারিয়ার সংক্রামিত হন করোনায় । সেই সাথে সামনে আসে, দিল্লী ক্যাপিটালস-এর অমিত মিশ্র এবং সানরাইজারস হায়দ্রাবাদদের ঋদ্ধিমান সাহা কোভিড ১৯ এর শিকার । প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলি যদিও এই বিষয় নিয়ে মুখ বন্ধ রেখেছেন । কিন্তু উঠে আসছে কিছু তথ্য ।
প্রথমত, গত বছর আরব আমিরশাহিতে আইপিএল অনুষ্ঠিত হলেও সেখানে বিভিন্ন মানুষের আসা যাওয়ার মধ্যে কঠোর নিয়ন্ত্রন ছিল । তিনটি মাঠে খেলা হলেও সেখানে দর্শক ছিল না । ক্রিকেটারদের বিভিন্ন শহর ঘুরে খেলতে হয়নি । কিন্তু ভারতে তেমনটা হয়নি । ক্রিকেটাররা বিভিন্ন রাজ্যের আলাদা আলাদা মাঠে খেলা করেছেন ।
দ্বিতীয়ত, ক্রিকেটারদের যে হোটেলে রাখা হয়েছিল সেখান থেকে মাঠ অনেকটা দূরে ছিল । এছাড়া অন্যান্য রাজ্যে যাবার জন্য আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ব্যবহার করতে হয়েছে তাদের । সেখান থেকে সংক্রমণ হবার সম্ভবনা থাকছে ।
তৃতীয়ত, হোটেলের মধ্যে জৈব বলয়ের সুরক্ষা কতখানি ছিল সেখানেও থাকছে প্রশ্ন । কারন, বিভিন্ন মাঠে খেলার কারনে একাধিকবার হোটেল পরিবর্তন করতে হয়েছে ক্রিকেটারদের । সেখানেও বদল ঘটেছে হোটেল কর্মীদের । হোটেল কর্মীদের মাধ্যমে করোনা আক্রান্ত হবার সম্ভবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না ।
চতুর্থত, প্র্যাকটিস করার জন্য আলাদা আলাদা মাঠ ব্যবহার করতে হয়েছে খেলোয়াড়দের । সেখানে মাঠ পরিষ্কার, পিচ তৈরি করা ছাড়াও আরও অনেক কাজের জন্য কর্মী নিয়োগ করতে হয়েছে । সেখান থেকেও একটা সম্ভবনা থাকছে ।
এছাড়াও, দেখা গেছে, খেলা চলাকালীন কাঁধে চোট পেয়ে নাইট রাইডারের বরুণ চক্রবর্তীকে গ্রিন করিডোর দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে হাসপাতালে কতখানি সুরক্ষার মধ্যে ছিলেন তিনি, তাই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন । অথচ গত বছর করোনার আবহের মধ্যে আমিরশাহিতে আইপিএল হয়েছে । কিন্তু সেখানে ক্রিকেটারদের চিপ ট্র্যাকিংয়ের মধ্যে রাখা হয়েছিল । সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রন ছিল তাদের যাতায়াতের বিষয় এবং স্থান । কিন্তু ভারতে এই সব ছিদ্র থেকেই গেছে । আপাতত বন্ধ আইপিএল । করোনা কাটিয়ে ফের কবে শুরু হবে এই বর্ণময় খেলা সেই নিয়ে সংশয় থাকছেই ।