দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ ভারত গত বছর থালা বাজিয়ে হোক বা অন্য উপায়ে ! করোনার প্রথম ধাক্কা সামলে উঠেছিল। কিন্তু আনলক পর্যায়ে এসে মানুষের করোনা নিয়ে ‘ছেলেখেলা’ দেখে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সুনামির আকার নিয়ে আছড়ে পড়েছে। প্রতিদিন নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে লাখে লাখে । কিন্তু আশঙ্কা করা হচ্ছে, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ! এই সতর্ক করলেন এইমসের প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া ।
দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশী করোনা আক্রান্ত রাজ্য মহারাষ্ট্র । কিছুদিন আগে, মহারাষ্ট্র সরকার আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, ‘আর কিছুদিনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের তৃতীয় তরঙ্গ দ্রুত ভারতে আছড়ে পড়বে’! এবার একই কথা শোনা গেল, অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেসের প্রধান রণদীপ গুলেরিয়ার কাছ থেকে । তিনি এদিন জানালেন, ‘এই মারণ ভাইরাস করোনা যেভাবে নিজের বৈশিষ্ট পাল্টাচ্ছে তাতে ভারত দ্রুত করোনা ভাইরাসের তৃতীয় তরঙ্গের সম্মুখীন হবে।’ করোনা মোকাবিলায় কিছু রাজ্যে সপ্তাহের শেষে লকডাউন কিম্বা নাইট কারফিউ চালু করেছে । তিনি এটাকে একেবারেই প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এইমস প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছেন, সপ্তাহের শেষে লকডাউন করলাম, আর বাকী দিনগুলি বাড়ির বাইরে ! কিম্বা রাতে কারফিউ আর দিনে কাজ করলাম, বিষয়টা ঠিক এমন না । কোভিড ১৯র চেইন ভাঙতে হলে অন্তত কিছু সময়ের জন্যে লকডাউনের অবশ্যই প্রয়োজন । এই বিষয়ে, এইমস প্রধান তিনটি বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন । প্রথমটি হ’ল হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো উন্নত করতে হবে । দ্বিতীয়টি, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে হবে আরও দ্রুত । আর তৃতীয়টি হল, দ্রুত টিকাকরন । তাঁর মতে, মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ কমাতে পারলে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত কমানো সম্ভব ।
ভারতে করোনা পরিস্থিতি আরও দ্রুত বাড়তে পারে । যে পরিমাণে মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের সবাইকে চিকিৎসা দিতে না পারলে, সংক্রমণ আরও বাড়বে । ফলে তৈরি হতে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ ! এইমস প্রধান বলেন, “যুক্তরাজ্যের মত রাজ্যের চাহিদা অনুযায়ী অঞ্চলভিত্তিক লকডাউন করা যেতেই পারে । যারা প্রশাসনে আছে তাদের এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দিন মজুর, শ্রমিকরা আছেন। জরুরিভিত্তিক পরিষেবা বজায় রাখতে হবে। তবে লকডাউন যেন কঠোরভাবে পালন করা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা সম্ভবত তৃতীয় তরঙ্গ দেখতে পাবো।”
আশঙ্কার কথা জানালেও, একটা স্বস্তির বার্তা দিয়েছেন রণদীপ গুলেরিয়া । তিনি জানিয়েছেন, “একটা স্বস্তির বিষয়, তখন আমাদের টিকাকরণ প্রায় সম্পূর্ণ হবে। হয়ত দ্বিতীয় তরঙ্গের মত বৃহত্ হবে না। খুব সহজেই পরিচালনা করা যাবে।” তবে তিনি সবাইকে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়ে বলেছেন, “ভারতে যে ডবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গিয়েছে তা গতবারের থেকে অনেক মারাত্মক। ভাইরাসটি এতটাই দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে যে , শেষ বারের তুলনায় কোরোনাগ্রাফ অনেকটাই ওপরে উঠেছে। করোনা শেষ হয়ে গিয়েছে এই আচরণও তার জন্যে কিছুটা দায়ী। ভাইরাসটিরও কিছু পরিবর্তন এসেছে।”