দি আজকের নিউজ ওয়েব ডেস্কঃ গত বছর করোনার আতঙ্ক ছিলই । কিন্তু ২০২১ সালে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যেন সুনামির মত আছড়ে পড়েছে । কোনভাবেই নামছে না সংক্রমণের হার । এই অবস্থায় সুখবর শোনাল কানপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) ও হায়দরাবাদ আইআইটি-র গবেষকরা । তারা জানিয়েছেন, মে মাসের মাঝামাঝি করোনা ঝড়ের গতি সবচেয়ে বেশী থাকবে এবং তার পরেই হুড়মুড়িয়ে নীচে নেমে আসবে ।
গতবছর গোটা বিশ্ব যখন করোনা আতঙ্কে থরথর করে কাঁপছে, সেই সময় বিজ্ঞানীরা শুনিয়েছিলেন আশ্বাসবাণী । জানিয়েছিলেন ২০২১ শে কমে যাবে করোনা সংক্রমণ । কিন্তু মেলেনি সেই আশ্বাসবাণী । বরং উল্টো হয়েছে । শুধুমাত্র ভারতেই দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ । সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২৫ লাখ । কবে এই প্রকোপ কমবে কেউ স্পষ্ট করে বলতে পারছে না । এই অবস্থায় কানপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) ও হায়দরাবাদ আইআইটি-র গবেষকরা একটু পূর্বাভাস দিয়েছেন ।
গবেষকদের মতে, করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা মে মাসের মাঝামাঝি চরম আকার ধারন করবে । সেই সময় ভারতে সংখ্যাটা ৩৫ লাখ ছাড়িয়ে যাবে । কিন্তু তারপরেই একধাক্কায় কমতে শুরু করবে অতি দ্রুত । মে মাসের শেষে সেই সংখ্যা একেবারেই কমে যাবে । কীভাবে আইআইটি গবেষকরা এই তথ্য জানাচ্ছেন ? জানা গেছে, গবেষকরা হিসাব করে একটা ‘সূত্র মডেল’ বের করেছেন। দেশে এখন কোভিড পজিটিভিটি রেট কত, এফেক্টিভ রিপ্রোডাকশন নম্বর (R-নম্বর), সংক্রমণের হার, অ্যাকটিভ কেসের হার ইত্যাদি বিবেচনা করেই এই তথ্য পেয়েছেন ।
এই বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছেন আইআইটি-কানপুরের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক মনীন্দ্র আগরওয়াল । তিনি জানিয়েছেন, ভারতে এখনই কোভিড অ্যাকটিভ কেসের হার ১৫ শতাংশের বেশি। ১০ এপ্রিলের মধ্যে ভাইরাস সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়াবে এমন ভাবা হয়েছিল প্রথমে। কিন্তু সেই ডেটা মেলেনি। তবে এখন যে হারে আক্রান্ত রোগী ও সংক্রমণের হার বাড়ছে, তাতে অনুমান করা হয়েছে মে মাসের মাঝামাঝি গিয়ে নতুন রেকর্ড তৈরি হবে। তবে তার পর থেকেই সংক্রমণের হার কমতে পারে দেশে। সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও দ্রুত কমতে শুরু করবে। গবেষকরা বলছেন, তিনটি প্যারামিটার দেখে এই সিদ্ধান্তে আসা গেছে। প্রথমটা ‘বিটা’ বা ‘কনট্যাক্ট রেট’। আক্রান্ত রোগীরা ঠিক কতজনের সংস্পর্শে আসছে, একজনের থেকে সংক্রমণ কতজনের মধ্যে ও কী হারে ছড়াচ্ছে, সেই তথ্য পর পর সাজিয়ে হিসাব করা হয়েছে ।
এর পরে রয়েছে, ‘রিচ’ ও ‘এপসাইলন’ । দুটো গাণিতিক ফর্মুলা মেনে হিসেব করা হয়েছে। রিচ মানে হল সংক্রমণের হার বেড়ে কতজন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, সংক্রমণ কতটা সীমা অতিক্রম করছে সেই তথ্য। আর এপসাইলন হল কতজন রোগীকে সনাক্ত করা গিয়েছে আর কতজন আক্রান্তকে সনাক্ত করা হয়নি তার অনুপাত । এর পাশাপাশি দেশে করোনা সংক্রমণ কী পর্যায়ে ছড়াচ্ছে সেটাও হিসেব করা হচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে তার থেকে সংখ্যাটা একটু আলাদা হতে পারে, তবে সম্ভাবনা আছে মে মাসের শেষ থেকেই ভাইরাস সক্রিয় রোগী কমতে থাকবে দেশে।